Posts

বাংলায় ইসলামের আগমন ও সামজিক-সাংস্কৃতিক রূপান্তরের নীরব বিপ্লবঃ বিকল্প ইতিহাস পাঠ-১ -আইনুল বারী

৯৯.বাংলায় ইসলামের আগমন ও সামজিক-সাংস্কৃতিক রূপান্তরের নীরব বিপ্লবঃ বিকল্প ইতিহাস পাঠ-১ -আইনুল বারী -- ------------ ------------- (১) বাংলায় ইসলামের অনুপ্রবেশ ঘটেছিলো তিনটি চ্যানেলে। প্রথমতঃ আরব অঞ্চলের ব্যবসায়ীদের সাথে এ অঞ্চলের লোকালয়ের বাণিজ্যিক যোহাযোগের চ্যানেলে।আরব ব্যবসায়ীরা দীর্ঘ দিন যাবৎ এ অঞ্চলের মানুষের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক তৈরি করে রেখেছিলো, তাদের মাধ্যমে আরবীয় সংস্কৃতির কিছু ছটা আর সেমিটিক ভাষার কিছু শব্দের অনুপ্রবেশ ঘটে, নবম-দশম-এগারো শতকের কাল পর্বে এসে অর্থাৎ প্রায় প্রথম যুগের ইসলাম ধর্মের প্রচার ও প্রসার ঘটে অল্পবিস্তর। দ্বিতীয়তঃ বারো শতকের পর থেকে ক্রমাগত এ দেশে সুফী-সাধক-পীর-ফকির ইসলাম ধর্ম প্রচারকদের আবির্ভাব হয়। ভারতবর্ষ ও বাংলায় সুফীসহ বিভিন্ন ঘরণার ধর্ম প্রচারকদের স্রোতের মতো আগমনের একটি বড় ঐতিহাসিক কারণ ছিলো, দূর্ধষ মোংগল নেতা হালাকু খানের আক্রমণে বাগদাদের পতন ও ব্যাপক হত্যা্কান্ড ও ধ্বংসযজ্ঞ। হালাকু খানের এই আক্রমণ বলা চলে সেদিন একটি সভ্যতারই পতন ঘটিয়েছিলো । জ্ঞান-বিজ্ঞান-দর্শন চর্চার কেন্দ্রস্থল তথা রাজধানী ছিলো বাগদাদ, যুক্...

অপব্যাখ্যাত আয়াত ৫ঃ৮২- ইহুদী ও মুশরিকরা মুসলমানদের প্রতি সবেচেয়ে বেশী বিদ্বেষ পোষণ করে।-আইনুল বারী

৯৮. অপব্যাখ্যাত আয়াত ৫ঃ৮২- ইহুদী ও মুশরিকরা মুসলমানদের প্রতি সবেচেয়ে বেশী বিদ্বেষ পোষণ করে।-আইনুল বারী ---------------------------------------------- ‘ নিশ্চয় তুমি দেখবে বিশ্বাসীদের (মুসলমানদের) প্রতি বিরোধিতায়/শত্রুতা পোষণে মানুষের মাঝে সবচেয়ে উগ্র হলো ইহুদীরা ও মুশরিকরা (বহু দেব-দেবীর পূজারীরা) ; আর যারা বলে , ' আমরা খৃষ্টান ', তাদেরকে বিশ্বাসীদের (মুসলমানদের) প্রতি অধিক বন্ধুত্বসুলভ দেখবে , কেননা তাদের মাঝে ধর্মযাজক ও সন্ন্যাসী রয়েছে , যারা অহংকারী নয়। ’- সূরাহ মাইদাহ(অধ্যায়-৫) , আয়াত-৮২ কুর ' আনের এই আয়াতটি অপব্যাখ্যাত হয়ে থাকে। এই অপব্যাখ্যার ফলে সমাজে উগ্র সাম্প্রদায়িকতার বিদ্বেষ ছড়িয়ে পড়ে। এই আয়াতে আল্লাহ মুসলমানদের কাছে একটি দুঃখজনক বাস্তবতাকে ব্যাক্ত করেছেন। দুটি সম্প্রদায়ের কাছ থেকে , মুসলমানেরা সব চেয়ে বেশি বিরোধিতা-বিদ্বেষের শিকার হবে। এটি একটি নির্মম বাস্তবতার ভবিষ্যৎবাণীও বটে। নবী মোহাম্মদ (তাঁর প্রতি শান্তি)-এর সময় যে নির্মম বাস্তবতা ছিলো ছিলো , ভবিষ্যতেও তেমনই হবে।কাজেই বলা যায় এটি একটি মিরাকেল আয়াত , যা এই দুই সম্প্রদায়ের প্রতি কুর '...

ইসলাম ধর্মে একাধিক স্ত্রীর অনুমোদন কীভাবে ন্যায় সংগত বিবেচিত হতে পারে? -আইনুল বারী

৯৭.ইসলাম ধর্মে একাধিক স্ত্রীর অনুমোদন কীভাবে ন্যায় সংগত বিবেচিত হতে পারে? -আইনুল বারী --------------- অনেকে সমালোচনা করে থাকেন, ইসলাম ধর্মে একজন পুরুষের ৪ জন স্ত্রী তথা বহু স্ত্রী রাখার বিধান কেনো থাকলো? এটা কি অন্যায় নয়? এটি কি ইসলামকে বিতর্কিত করলো না? বিষয়টি এমন নয় সুযোগ আছে বলেই একাধিক স্ত্রী রাখতে হবে। একজন স্ত্রীর বেশি স্ত্রী রাখা কিন্তু বাধ্যবাধকতা নয় ইসলামে! আজকের যুগের মানুষের কাছে বাস্তবতার নিরিখে, যুক্তিসংগত কারণে ও পারষ্পরিক সম্মতিতে বহু স্ত্রী রাখা যথার্থ মনে না হলে, সেটিই এ যুগের সাধারণ সামাজিক মূল্যায়ন ও মূল্যবোধ হিসেবে গ্রহণীয় হবে। কুর'আনে এমুন কথা নেই যে যুগের মূল্যবোধকে অস্বীকার করে হলেও বহু স্ত্রী রাখা ন্যায় সংগত কাজ হবে। মানুষকে আল্লাহ শুধু ধর্মগ্রন্থই, দিয়েছেন কান্ড জ্ঞান ও বিবেকবোধও। ইসলামে কামনা-বাসনা চরিতার্থ করার জন্য বহু বিবাহের বিধান নেই। ৪ জন স্ত্রী রা...

'শুন হে মানুষ ভাই, সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই।' : আমি মানুষ বনাম আমি মুসলমান-আইনুল বারী

' শুন হে মানুষ ভাই , সবার উপরে মানুষ সত্য , তাহার উপরে নাই। ' : আমি মানুষ বনাম আমি মুসলমান - আইনুল বারী ----  -------------  ' শুন হে মানুষ ভাই , সবার উপরে মানুষ সত্য , তাহার উপরে নাই। ' - চতুর্দশ খৃষ্টাব্দের বৈষ্ণব কবি চন্ডীদাস যারা মানবতাবাদী ও নাস্তিক , তারা যুক্তি দিয়ে নিজেদের পরিচয় দিতে চান , আমরা মানুষ। আমরা হিন্দু না , খৃস্টান না , মুসলমান না , আমরা মানুষ। সবার উপরে মানুষ সত্য , তাহার উপরে নাই। অন্যদিকে , ধর্মীয় পরিচয়ে এমন উদারতা নেই , তার বদলে আছে সাম্প্রদায়িকতা , বিভেদের সংকীর্ণতা। যখন কেউ বলে , আমি মুসলমান , আমি খৃস্টান , আমি বৌদ্ধ , আমি শিখ , আমি জৈন , তখন তাকে অন্য সকল সম্প্রদায়ের মানুষকে বাদ দিয়ে চিন্তা করতে হয় । ' মানুষ ' বললে এর ভেতরে সবাই চলে আসে , জটিলতা থাকে না। অসহায় একজন মানুষের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে ভাবতে হয় না মানুষটি ইহুদী , নাকি খৃস্টান , নাকি মুসলমা্‌ন নাকি নাস্তিক। সে একজন মানুষ , এ পরিচয়ই যথেষ্ট। মানুষ পরিচয়ের মাঝে সাম্প্রদায়িক ঘৃণা-বিদ্বেষ , দ্বিধা-দ্বন্দ্ব , এসব থাকে না। একেই বলে মানবতা। প্রক...

ন্যায়পরায়ণতা, মানবতাবাদ সংক্রান্ত কুর'আনের কতিপয় আয়াত- আইনুল বারী

৯৫.ন্যায়পরায়ণতা, মানবতাবাদ সংক্রান্ত কুর'আনের কতিপয় আয়াত- কুর ' আন মানবজাতির জ ন্য জীবন যাপনের সোজা পথের সর্বোত্তম পথ-নির্দেশিকা। কুর ' আনের আয়াতগুলি একটু মনোযোগের সাথে পাঠ করলে আমাদের   উপলব্ধিতে আসতো , ইসলাম ধর্ম শুধু  নামায , রোজা হজ্ব , জাকাতের মধ্যে সীমাবদ্ধ আনুষ্ঠানিকতা নয় , বরং এটি সৎ জীবন যাপনের কর্মশীলতার ধর্ম । এ ধর্মের মূল প্রতিপাদ্য হলো মানবতাবোধ , ন্যায়বিচার , সত্যবাদিতা , সততা। এখানে ন্যায়বিচার ও মানবতাবাদ সম্পর্কে কুর ' আনের কতিপয় আয়াত তুলে ধরা হলোঃ ‘ হে বিশ্বাসীরা ! আল্লাহর স্বাক্ষীরূপে ন্যায় বিচারে দৃঢ় থাকো , যদিও তা তোমাদের নিজেদের বিরুদ্ধে যায় অথবা মাতা - পিতা ও আত্মীয় - স্বজনদের বিরুদ্ধেও । যদিবা সে ধনী বা গরীব হয় , আল্লাহ উভয়ের প্রতিই দয়ালু । সুতরাং ব্যক্তিগত কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ করো না পাছে তোমারা ন্যায় বিচার থেকে বিচ্যূত হয়ে পড়ো । আর যদি তোমরা তা করো বা এড়িয়ে যাও , তবে নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের কৃতকর্মের খবর রাখেন । ’ - সুরাহ নিসা আয়াত - ১৩৫ ‘ এ জন্য আমি বনী ইসরাঈলের ...