আমারা সত্যি কি কুরবানীর মর্মার্থ বুঝতে পেরেছি?-আইনুল বারী
১০৬.আমারা কি কুরবানীর মর্মার্থ বুঝতে পেরেছি?-আইনুল বারী
---------------------------------------------------------
মানুষের বেঁচে থাকার জন্যে খাদ্য হিসেবে মাংশের প্রয়োজন কতোটা জরুরি?
আল্লাহ কি প্রতি বছর পশু কুর'বাণী বাধ্যতামূলক করেছেন? মাংশের প্রয়োজন মেটাতে, নাকি ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালনের জন্যে এতো পশু জবাই? আমারা সত্যি কি কুরবানীর মর্মার্থ বুঝতে পেরেছি? ----- (২) প্রথমেই আমি Vegan-দেরকে আমার বিনীত শ্রদ্ধা জানাই, প্রাণীকূলের প্রতি তাদের অপরিসীম ভালোবাসার জন্যে। আমি বিশ্বাস করি প্রাণীর প্রতি ভালোবাসায় আছে মহান ঐশ্বরিক অনুপ্রেরণা। ঐশ্বরিক অনুপ্রেরণা আত্মাকে পবিত্র করে। ইসলাম ধর্মে মাংশ খাওয়া বাধ্যতামূলক নয়, এটি কোনো কঠোর ধর্মীয় আদেশ-নিষেধ নয়। বরফ অঞ্চলের এস্কিমো ও মরু অঞ্চলের বেদুইন ও যাযাবর পশুপালনকারীরা একসময় খাদ্য হিসেবে পশুর মাংশ ছাড়া তেমন কিছু খুঁজে পায়নি বলে প্রধান খাদ্য হিসেবে বেছে নিয়েছে, তাই বলে পশুর মাংশ খাওয়া পৃথিবীর সব মানুষের জন্যে আবশ্যকীয় হয়ে যায়নি। আল্লাহ পশু কুর'বানীর কথা বলেছেন, হজ্জ পালন কালে, কিন্তু পশু কুরবানীকে সকলের জন্যে বাধ্যতামূলক করেননি। যদি অন্তরে তাকওয়া না থাকে কুরবানী করেই বা কী ফল হবে? কুর'বানীর মাংশ মূলত গরীব মানুষের মাঝে বিতরণের জন্যে, যারা অনাহারে-অর্ধাহারে থাকে। আল্লাহ চান স্বচ্ছল বিশ্বাসী মানুষগুলি যেনো নিজেদের ধনসম্পদ অস্বচ্ছল মানুষের কল্যাণে ব্যয় করে। এ হলো আত্মশুদ্ধির জন্যে, এ হলো ধার্মিকতা। আল্লাহের কাছে রক্ত-মাংশ পৌঁছে না, পৌঁছে 'তাকওয়া', আল্লাহ-সচেতনতা তথা ধার্মিকতা। 'তাদের মাংশ ও তাদের রক্ত আল্লাহ'র কাছে পৌঁছে না; তবে তাঁর কাছে পৌঁছে তোমাদের অন্তরের ধার্মিকতা (আল্লাহ-সচেতনতা, তাকওয়া। ...'- সূরাহ হজ্জ(অধ্যায়-২২),আয়াত-৩৭ এই ধার্মিকতাকে অন্তর দিয়ে বুঝলে আমরা নিশ্চয় কুর'বানীর ঈদ পালনের নামে বাধ্যতামূলকভাবে প্রতি বছর প্রাণী জবাইয়ের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হতাম না। আমরা সত্যিকার অর্থে কুরবানীও দেই না, আবেগহীনভাবে পশু জবাই করি। যদি দরিদ্র, অনাহারী মানুষকে মাংশ খাওয়ানোর ইচ্ছাই থাকে সারা বছর কেনো তাদেরকে ভুলে যাই? (৩) মুসলিম সমাজের প্রভাবশালী মোল্লাতন্ত্রই আমাদের অন্তরের কুর'বানী্কে ধার্মিকতা থেকে বহিষ্কার করে বিবশ পাশবিকতায় পরিণত করেছে। কসাইয়ের মতো আবেগহীনভাবে আমরা পশু জবাই করি, সেখানে কি আছে আল্লাহ'র প্রতি ভালোবাসা? তা কি অনাহারে থাকা গরীব মানুষের প্রতি দায়িত্ববোধ ও ভালোবাসা থেকে উৎসারিত? না, নিজের বিশ্বাসের প্রতি সৎ থেকেও নয়। বরং এক বোধহীন-বিবেকহীন অন্ধত্ব থেকে জন্ম নেয়া ভয়ংকর তান্ত্রিকতা এটি। তাই আমাদের হৃদয় মানবিক আবেগ হারিয়ে এক মায়া-মমতাহীন মাংশের হৃৎপিন্ডে পরিণত হয়, কুরবানীর পশুকে লাভ-ক্ষতির বস্তু ও মাংশের অতিরিক্ত হিসেবে ভাবতে পারে না। আল্লাহ জানেন নিজের প্রতি নিজের সততার প্রশ্নে নিশ্চয় হেরে যাবো, এ আত্ম-প্রবঞ্চনা ছাড়া আর কিছু নয়। (৪) মানুষের বেঁচে থাকার জন্যে খাদ্য হিসেবে মাংশের প্রয়োজন, তবে ততোদিন পর্যন্ত তা অজুহাত,যতোদিন না মানুষ মাংশের বিকল্প খাদ্য খুঁজে পায়। ধর্মের জন্যে কুরবানী হিসেবে পশু জবাই অর্থহীন হবে, যদি না তা অন্তরকে স্পর্শ করে, সত্যের উপলব্ধিতে আত্মাকে জাগায়।
---------------------------------------------------------
মানুষের বেঁচে থাকার জন্যে খাদ্য হিসেবে মাংশের প্রয়োজন কতোটা জরুরি?
আল্লাহ কি প্রতি বছর পশু কুর'বাণী বাধ্যতামূলক করেছেন? মাংশের প্রয়োজন মেটাতে, নাকি ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালনের জন্যে এতো পশু জবাই? আমারা সত্যি কি কুরবানীর মর্মার্থ বুঝতে পেরেছি? ----- (২) প্রথমেই আমি Vegan-দেরকে আমার বিনীত শ্রদ্ধা জানাই, প্রাণীকূলের প্রতি তাদের অপরিসীম ভালোবাসার জন্যে। আমি বিশ্বাস করি প্রাণীর প্রতি ভালোবাসায় আছে মহান ঐশ্বরিক অনুপ্রেরণা। ঐশ্বরিক অনুপ্রেরণা আত্মাকে পবিত্র করে। ইসলাম ধর্মে মাংশ খাওয়া বাধ্যতামূলক নয়, এটি কোনো কঠোর ধর্মীয় আদেশ-নিষেধ নয়। বরফ অঞ্চলের এস্কিমো ও মরু অঞ্চলের বেদুইন ও যাযাবর পশুপালনকারীরা একসময় খাদ্য হিসেবে পশুর মাংশ ছাড়া তেমন কিছু খুঁজে পায়নি বলে প্রধান খাদ্য হিসেবে বেছে নিয়েছে, তাই বলে পশুর মাংশ খাওয়া পৃথিবীর সব মানুষের জন্যে আবশ্যকীয় হয়ে যায়নি। আল্লাহ পশু কুর'বানীর কথা বলেছেন, হজ্জ পালন কালে, কিন্তু পশু কুরবানীকে সকলের জন্যে বাধ্যতামূলক করেননি। যদি অন্তরে তাকওয়া না থাকে কুরবানী করেই বা কী ফল হবে? কুর'বানীর মাংশ মূলত গরীব মানুষের মাঝে বিতরণের জন্যে, যারা অনাহারে-অর্ধাহারে থাকে। আল্লাহ চান স্বচ্ছল বিশ্বাসী মানুষগুলি যেনো নিজেদের ধনসম্পদ অস্বচ্ছল মানুষের কল্যাণে ব্যয় করে। এ হলো আত্মশুদ্ধির জন্যে, এ হলো ধার্মিকতা। আল্লাহের কাছে রক্ত-মাংশ পৌঁছে না, পৌঁছে 'তাকওয়া', আল্লাহ-সচেতনতা তথা ধার্মিকতা। 'তাদের মাংশ ও তাদের রক্ত আল্লাহ'র কাছে পৌঁছে না; তবে তাঁর কাছে পৌঁছে তোমাদের অন্তরের ধার্মিকতা (আল্লাহ-সচেতনতা, তাকওয়া। ...'- সূরাহ হজ্জ(অধ্যায়-২২),আয়াত-৩৭ এই ধার্মিকতাকে অন্তর দিয়ে বুঝলে আমরা নিশ্চয় কুর'বানীর ঈদ পালনের নামে বাধ্যতামূলকভাবে প্রতি বছর প্রাণী জবাইয়ের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হতাম না। আমরা সত্যিকার অর্থে কুরবানীও দেই না, আবেগহীনভাবে পশু জবাই করি। যদি দরিদ্র, অনাহারী মানুষকে মাংশ খাওয়ানোর ইচ্ছাই থাকে সারা বছর কেনো তাদেরকে ভুলে যাই? (৩) মুসলিম সমাজের প্রভাবশালী মোল্লাতন্ত্রই আমাদের অন্তরের কুর'বানী্কে ধার্মিকতা থেকে বহিষ্কার করে বিবশ পাশবিকতায় পরিণত করেছে। কসাইয়ের মতো আবেগহীনভাবে আমরা পশু জবাই করি, সেখানে কি আছে আল্লাহ'র প্রতি ভালোবাসা? তা কি অনাহারে থাকা গরীব মানুষের প্রতি দায়িত্ববোধ ও ভালোবাসা থেকে উৎসারিত? না, নিজের বিশ্বাসের প্রতি সৎ থেকেও নয়। বরং এক বোধহীন-বিবেকহীন অন্ধত্ব থেকে জন্ম নেয়া ভয়ংকর তান্ত্রিকতা এটি। তাই আমাদের হৃদয় মানবিক আবেগ হারিয়ে এক মায়া-মমতাহীন মাংশের হৃৎপিন্ডে পরিণত হয়, কুরবানীর পশুকে লাভ-ক্ষতির বস্তু ও মাংশের অতিরিক্ত হিসেবে ভাবতে পারে না। আল্লাহ জানেন নিজের প্রতি নিজের সততার প্রশ্নে নিশ্চয় হেরে যাবো, এ আত্ম-প্রবঞ্চনা ছাড়া আর কিছু নয়। (৪) মানুষের বেঁচে থাকার জন্যে খাদ্য হিসেবে মাংশের প্রয়োজন, তবে ততোদিন পর্যন্ত তা অজুহাত,যতোদিন না মানুষ মাংশের বিকল্প খাদ্য খুঁজে পায়। ধর্মের জন্যে কুরবানী হিসেবে পশু জবাই অর্থহীন হবে, যদি না তা অন্তরকে স্পর্শ করে, সত্যের উপলব্ধিতে আত্মাকে জাগায়।
Comments
Post a Comment