বস্তুবাদী জ্ঞানতত্ত্বের সীমাবদ্ধতা-১ -আইনুল বারী

৯৪.বস্তুবাদী জ্ঞানতত্ত্বের সীমাবদ্ধতা- দার্শনিক আলাপন-১
-আইনুল বারী
-- ---- ---


গোঁড়া বস্তুবাদীরা অনেক ক্ষেত্রেই বোঝেন না বস্তুকে নয় আমরা খুঁজি বাস্তবতাকে(reality);  হতে পারে বস্তু 
হচ্ছে বাস্তবতার একটি প্রকাশ বা বিন্যাস মাত্র, কিন্তু বাস্তবতার কি তা সবটুকু? তাই জগত-বাস্তবতাকে অনুধাবনের ক্ষেত্রে বস্তুবাদী নাস্তিকতা এক ধরণের বর্ণান্ধতার জন্ম দিয়েছেন, তাই তা দার্শনিক চিন্তা-মননে 
সেকেলে হয়ে পড়েছে।

বাস্তবতা কী? অস্তিত্বশীল বাস্তবতা কেমন? - 
এসব দীর্ঘ একাডেমিক আলোচনা। শুধু দার্শনিক বার্কলির বিখ্যাত উচ্চারণটি এখানে স্মরণ করবো,
'esse est percipi' (to be is to be perceived).  প্রকৃত অর্থে  এই ধাধাঁর সমাধান করা আজো সম্ভব হয়নি।
কিন্তু মুক্ত চিন্তা ও বিজ্ঞানের বিকাশ আমাদের রহস্যময় বিশ্বজগতের পেছনে এক ঐশ্বরিক সত্তার প্রয়োজনীয়তার অপরিহার্যতাকে মনে করিয়ে দেয়, যদিও অমনোযোগী,  যে সাধারণ বস্তুবাদী চোখে ধরা পড়ে না। বস্তুবাদীরা আত্মাচেতনা, প্রাণ, আমি-কে ব্যাখ্যা করতে পারেন না,  কেননা তারা সেগুলিকেও চূড়ান্ত 'বস্তু' হিসেবেই সঙ্গায়িত 
করে থাকেন। এই বস্তুগত বাস্তবতার ভিত্তির পাশে আমাদের অস্তিত্ব পর্যন্ত অলীক সত্যে(ইল্যুশন) পরিণত হয়।

যদি জিজ্ঞেস করি, তাহলে সত্যের মৌলিক ভিত্তি কী?... উত্তর আসবেঃ মস্তিষ্ক! যদি মস্তিষ্কই মূল ভিত্তি হয়, তাহলে আত্মাহীন সেই মস্তিষ্কতো রোবটের মতো, কে তার ধারক(authority) হবে?... এর যথাযথ উত্তর বস্তুবাদীদের পক্ষে দেয়া সম্ভব নয়। তাদের পক্ষে একটাই উত্তর হতে পারে, মস্তিষ্কের ধারক বলে যা অনুমান করি তা হলো মস্তিষ্কেরই প্রাণ-রাসায়নিক কার্যফল, 'আমিত্মের' এক ধরণের ইল্যুশন! আবার সেই প্রশ্ন ফিরে আসে, এমন নামহীন-গোত্রহীন মানব মস্তিষ্কের মালিকানা কার? কীভাবে পেলো সে? ... আরও বিস্তারিত জানতে চেষ্টা করবো পরবর্তীতে,  ছোট ছোট সম্পূরক অনুচ্ছেদে, ইনশা'আল্লাহ। 

Comments

Popular posts from this blog

'শুন হে মানুষ ভাই, সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই।' : আমি মানুষ বনাম আমি মুসলমান-আইনুল বারী

অপব্যাখ্যাত আয়াত ৪ঃ৩৪- স্ত্রীকে প্রহার করা কি ইসলামে অনুমোদিত?-আইনুল বারী

সত্য অনুসন্ধানী ধার্মিকের চোখে নাস্তিক্যবাদী সংশয় ঘৃণার বস্তু নয়, কেননা জ্ঞানের সংশয়ে পাপ নেই, জ্ঞান চর্চায় ঘৃণা বিদ্বেষের প্রয়োজন নেই -আইনুল বারী