‘শবে বরাত’ তথা ‘ভাগ্য রজনী’ বা ‘মুক্তির রাত’ বলে ইসলাম ধর্মে সত্যি কিছু আছে? -আইনুল বারী
৯০. ‘শবে বরাত’ তথা ‘ভাগ্য রজনী’ বা ‘মুক্তির রাত’ বলে ইসলাম
ধর্মে সত্যি কিছু আছে?
-আইনুল বারী
-- -- ---
--- ---
শবে বরাতের অর্থগত ব্যাঞ্জনা হলো, এ হলো জাহান্নাম থেকে মুক্তির রাত, অর্থাৎ ভাগ্য রজনী। শব্দের অর্থ হচ্ছে, প্রচলিত বিশ্বাস হচ্ছে, এই দিনে সারা বছরের ভাগ্য নির্ধারিত হয়। শাবান মাসে ১৪ ও ১৫ তারিখের মধ্যে দিনটি পরে। তাই মুক্তির জন্য সারা রাত জেগে দোয়া দরুদ পড়া হয়, সালাতের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থণা করা হয়। বিশ্বাস করা হয় শা'বানের ১৫ তারিখ রাতে আল্লাহ পৃথিবীর আকাশে অবতরণ করেন । তিনি এই রাতে তাঁর সৃষ্টিলোকের দিকে দৃষ্টি দেন এবং তাঁর ক্ষমা প্রার্থী বান্দাদের মধ্যে অনেককেই ক্ষমা করে দেন।
(২) শবে বরাত ব্যাপারে অন্ধ অনুসারীরা অবাক হবে যদি শোনেন, এটি ইসলামের নামে একটি বিভ্রান্তি বা নিছক কুসংস্কার, খুব আজগুবি ধরণের কুসংস্কার । যেহেতু আল্লাহর নামে ও নবীর নামে (তাঁর প্রতি শান্তি) এই ধর্মীয় আচার পালন করা হয়, তাই এটি মিথ্যারোপের মতো একটি গুরুতর অন্যায়ও বটে। এ রকম কথা কুর’আনেতো নেই, এমনকি কোনো প্রমাণিত হাদিসও নেই এর পক্ষে। কোনো প্রসিদ্ধ ইসলামী গবেষক তথ্য-প্রমাণ সহকারে এর পক্ষে বলেছেন আমার জানা নেই, বরং যতোটুকি জেনেছি, নবী কখনও শবে বরাত পালন করেছিলেন এমন তথ্য-প্রমাণ নেই, সাহাবীরা পালন করেছিলেন তার নির্ভরযোগ্য তথ্য-প্রমাণ নেই, তাবেয়্যিনরাও কেউ পালন করেন নি। শবে বরাত’ এই শব্দটিই আরবী নয়, এবং তার সঠিক সমার্থক আরবী প্রতিশব্দও করা যায় না। এই প্রথার অনুপ্রবেশ ঘটেছে নবীর মৃত্যুর (তাঁর প্রতি শান্তি)প্রায় সাড়ে পাঁচ শত বছর পর। আসলে লায়লাতুল ক্বাদরকে মধ্য শবানের শবে বরাতে পরিণত করা হয়েছে। দুঃখজনক হলেও সত্য যে লায়লাতুল ক্বদর নিয়েও বিভ্রান্তি রয়েছে।
(৩) শবে বরাতের পক্ষে সূরাহ দুখানের(অধ্যায়-৪৪) ৩-৫ আয়াত রেফারেন্স হিসেবে দাঁড় করানোর চেষ্টা করা হয়, কিন্তু এই আয়াতগুলিতে কী বলা হয়েছে?
‘নিশ্চয়, আমি একে (কুর’আন)নাযিল করেছি এক মহিমান্বিত রাতে, নিশ্চয় আমি সতর্ক করে দেই।’
এখানে কুর’আন নাযিল সম্পর্কে বলা হয়েছে, শাবান মাসের ১৫ তারিখের ‘শবে বরাত’ সম্পর্কে কিছুই বলা হয় নি। কাজেই এটি না বুঝে উপস্থাপিত একটি ভুল রেফারেন্স।
কুর’আনের নানা প্রসংগে নানা আয়াত নাযিল হয়েছে। ঐ আয়াতগুলির প্রতি একটু মনোযোগ দিলে উপলব্ধি করা সম্ভব, আল্লাহর ক্ষমা কীভাবে পাওয়া সম্ভব। মন্দ কাজের বিপরীতে অনুশোচনা ও ভালো কাজের মাধ্যমেই ক্ষমা লাভ করা সম্ভব। বছরের কোনো একটি দিন আল্লাহ ভাগ্য রচনা করেন, কাজেই সেদিনের জন্য অপেক্ষায় থাকো, সেদিন রাতভর সালাত ও কুর’আন পাঠে মগ্ন থাকো- এমন অদ্ভুত কল্পনায় বিভোর না থেকে, বরং আত্ম-প্রবঞ্চনার পথ পরিহার করে আত্মশুদ্ধির পথ ধরে পরকালের জন্য কাজ করে যাওয়াই উচিত। আল্লাহ বলেছেন:-
'সে দিন মানুষ বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে এগিয়ে যাবে, যাতে তাদের কৃতকর্ম দেখতে পায়।'
'তারপর কেউ কণা পরিমাণ সৎকর্ম করলেও তা দেখতে পাবে।'
'আর কণা পরিমাণ মন্দ কর্ম করলেও তা দেখতে পাবে।'-সুরাহ আয-যালযালাহ,৯৯ঃ৬-৮
‘তোমরা যদি প্রকাশ্যে দান করো, তা ভালো, আর যদি তা গোপনে করো ও অভাবগ্রস্তদেরকে দাও, তা আরও ভালো, এতে (দানের কারণে)তোমাদের কিছু পাপমোচন হবে; আর তোমরা যা কিছু করো আল্লাহ তা জানেন।’ -সুরাহ বাক্বারাহ(অধ্যায়-২),আয়াত-২৭১
‘তাদেরকে সৎপথে আনার দায়িত্ব তোমার নয়, বরং আল্লাহ যাকে ইচ্ছা সৎপথে পরিচালনা করেন; আর যা কিছু ভালো তোমরা ব্যয় করো সে তো নিজেদের কল্যাণের জন্যই করো, তোমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি ছাড়া অন্য কোনো উদ্দেশ্যে ব্যয় করো না; কল্যাণমূলক যা কিছু তোমরা ব্যয় করো তার প্রতিদান পুরোপুরি দেয়া হবে, আর তোমাদের প্রতি কোনো অন্যায় করা হবে না।’-সুরাহ বাক্বারাহ(অধ্যায়-২),আয়াত-২৭২
‘যারা নিজেদের সম্পদ রাতে ও দিনে, গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, নিশ্চয় তাদের পুরষ্কার আছে তাদের প্রতিপালকের কাছে; আর তাদের কোনো ভয় নেই, তারা দুঃখিতও হবে না।’ -সুরাহ বাক্বারাহ(অধ্যায়-২),আয়াত-২৭৪
'যে সৎকর্ম করে সে নিজের জন্যই করে,আর যে অসৎকর্ম করে তা তার নিজের বিরুদ্ধেই যাবে, এবং তারপর তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের দিকে প্রত্যাবর্তিত হবে।'-সূরাহ জা'থিয়া (অধ্যায়-৪৫),আয়াত-১৪,১৫
‘এরা সে সব মানুষ যাদের সৎকর্মসমূহ আমি গ্রহণ করি, এবং তাদের যাবতীয় গুনাহ আমি মাফ করে দিবো, এরাই বেহেশতবাসীর অন্তর্ভুক্ত হবে, তাদেরকে প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি সত্য প্রমাণিত হবে।’-সুরাহ আহক্বা-ফ (অধ্যায়)-৪৬, আয়াত-১৫-১৬
‘আল্লাহ মানুষের উপর কোনো অবিচার করেন না, বরং মানুষ নিজেই নিজের উপর অবিচার করে।’-সুরাহ ইউনুস(অধ্যায়-১০),আয়াত-৪৪
'ও বিশ্বাসী গণ! আল্লাহর দিকে ফিরে এসো, আন্তরিক অনুশোচনায়।হয়তোবা তোমাদের পালনকর্তা তোমাদের মন্দ কর্মসমূহ মুছে দেবেন আর তোমাদের বেহশতের বাগানে প্রবেশ করাবেন, যার তলদেশে প্রবাহিত নদীর স্রোতধারা। সেদিন আল্লাহ নবী ও তাঁর সাথে যারা বিশ্বাসী তাদের অপদস্ত করবেন না। তাদের জ্যোতি(নূর)তাদের সামনে ছুটোছুটি করবে আর তাদের ডান দিকে; তারা বলবেঃ হে আমাদের পালনকর্তা,আমাদের জ্যোতিকে পূর্ণ করে দিন আর আমাদের ক্ষমা করুন! নিশ্চয় আপনি সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান (সব কিছু করতে সক্ষম)।’-সূরাহ তাহরিম (অধ্যায়-৬৬),আয়াত-৮
‘আর তারা যখন কোনো অন্যায় করে ফেলে বা নিজেদের প্রতি জুলুম করে, তখন আল্লাহকে স্মরণ করে ও স্বীয় পাপের জন্য ক্ষমা চায়; আর ক্ষমা কেইবা করতে পারে আল্লাহ ছাড়া? তারা জেনে শুনে কাজের ওপর জিদ ধরে না।’ -সূরাহ ৩ সুরাহ ইমরান, আয়াত-১৩৫
'ধৈর্য ও প্রার্থণার মাধ্যমে সাহায্য কামনা করো; বাস্তবিকই তা কঠিন,(অনুগত) বিনয়ীরা ছাড়া।' -সুরাহ বাক্বারাহ, অধ্যায়-২, আয়াত-৪৫
‘বলুন, হে বান্দারা তোমরা যারা নিজেদের প্রতি অবিচার করেছো, আল্লাহর দয়া(ক্ষমা, রহমত) হতে নিরাশ হয়ো না, নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের সব পাপ ক্ষমা করে দিবেন, তিনি পরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।'-সুরাহ যুমার, আয়াত-৫৩
'যে অবস্থায় তোমরা আছো সে অবস্থায় আল্লাহ মু’মিনদের ছাড়তে পরেন না; যতোক্ষণ না পবিত্র হতে অপবিত্র পৃথক করতে পারেন; আল্লাহ এমন নন যে, তিনি তোমাদেরকে খবর দেবেন অদৃশ্যের; তবে আল্লাহ রাসুলদের মধ্য হতে ইচ্ছেমতো বেছে নেন, অতএব আল্লাহ ও রাসুলদের বিশ্বাস করো; যদি তোমরা ঈমান আনো আর ভয় করো তবে তোমাদের জন্য রয়েছে বড় প্রতিদান।'-সুরাহ ইমরান, আয়াত-১৭৯ আয়াত-১৭৯
'একজন রসুল যিনি তোমাদের কাছে আল্লাহর সুস্পষ্ট আয়াত সমূহ পাঠ করেন, যেনো তিনি বিশ্বাসী ও সৎকর্মশীলদের অন্ধকার থেকে আলোয় নিয়ে আনতে পারেন; আর যে আল্লাহকে বিশ্বাস করে আর সৎকর্ম করে, তিনি তাকে এমন বেহেশতে আনবেন যার নিচে প্রবাহিত নদী, সেখানে হবে চিরকালের বাস; আল্লাহ তার জন্য উত্তম ব্যবস্থা রেখেছেন।'-সুরাহ তালাক্ব, অধ্যায়-৬৫, আয়াত-১১
'হে বিশ্বাসীগণ তোমরা সশ্রদ্ধ নতশীর হও (রুকু করো), আর গভীর শ্রদ্ধাভরে প্রণত হও (সেজদা করো), আর তোমাদের পালনকর্তার এবাদত করো, আর সৎকর্ম করো, যেনো তোমরা সফলকাম হতে পারো।'-সূরাহ হজ্জ, (অধ্যায়-২২),আয়াত-৭৭
'তোমাদের উপর যেসব বিপদ আপদ নেমে আসে তা তোমাদের কর্মেরই ফল; তিনি অধিকাংশই ক্ষমা করে দেন।' -সূরাহ আশ-শুর'আ, ৪২ঃ৩০
‘আর যারা আমার নিদর্শনসমূহে(আয়াতসমূহে) বিশ্বাস করে তারা যখন আপনার কাছে আসবে, তখন বলুনঃ তোমাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক! তোমাদের পালনকর্তা নিজ দায়িত্বে করুণার বিধি দিয়েছেন, যদি তোমাদের মাঝে কেউ না জেনে কোনো অন্যায় করে, পরমুহূর্তে অনুশোচনা করে,আর নিজেকে সংশোধন করে নেয়, তবে নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল,করুণাময়!’-সূরাহ আন'আম(অধ্যায়-৬),আয়াত-৫৪
‘কেনো তারা আল্লাহর দিকে অনুতপ্ত হয়ে ফিরে আসে না, আর ক্ষমা প্রার্থণা করে না? কেননা আল্লাহতো ক্ষমাশীল, দয়ালু।’-সূরাহ মা'ইদাহ (অধ্যায়-৫), আয়াত-৭৪
'মানুষ কি মনে করে যে, তারা একথা বলেই অব্যাহতি পেয়ে যাবে যে, আমরা বিশ্বাস করি আর তাদেরকে পরীক্ষা করা হবে না?' -সুরাহ আল-আনকাবুত(অধ্যায়-২৯), আয়াত-২
'আর সকলের জন্য তাদের কৃতকর্ম অনুযায়ী বিভিন্ন (মর্যাদার) স্তর রয়েছে, যাতে আল্লাহ তাদের কর্মের পূর্ণ প্রতিফল দিতে পারেন; এবং তাদের প্রতি কোনো অবিচার হবে না।' -সূরাহ আহক্বাফ(অধ্যায়-৪৬),আয়াত-১৯
‘আর আমি প্রতিটি মানুষের ভাগ্যকে তার জন্য গলার হার করে রেখেছি, আর পুনরুত্থানের দিনে আমি তার জন্য বই বের করবো যা সে খোলা পাবে।’
‘বই পাঠ করো, আজ তোমার হিসাবের জন্য তুমি নিজেই যথেষ্ঠ।’-সুরাহ আল-ইসরা অধ্যায় ১৭ আয়াত ১৩,১৪
(পুরোনো লেখা।)
(২) শবে বরাত ব্যাপারে অন্ধ অনুসারীরা অবাক হবে যদি শোনেন, এটি ইসলামের নামে একটি বিভ্রান্তি বা নিছক কুসংস্কার, খুব আজগুবি ধরণের কুসংস্কার । যেহেতু আল্লাহর নামে ও নবীর নামে (তাঁর প্রতি শান্তি) এই ধর্মীয় আচার পালন করা হয়, তাই এটি মিথ্যারোপের মতো একটি গুরুতর অন্যায়ও বটে। এ রকম কথা কুর’আনেতো নেই, এমনকি কোনো প্রমাণিত হাদিসও নেই এর পক্ষে। কোনো প্রসিদ্ধ ইসলামী গবেষক তথ্য-প্রমাণ সহকারে এর পক্ষে বলেছেন আমার জানা নেই, বরং যতোটুকি জেনেছি, নবী কখনও শবে বরাত পালন করেছিলেন এমন তথ্য-প্রমাণ নেই, সাহাবীরা পালন করেছিলেন তার নির্ভরযোগ্য তথ্য-প্রমাণ নেই, তাবেয়্যিনরাও কেউ পালন করেন নি। শবে বরাত’ এই শব্দটিই আরবী নয়, এবং তার সঠিক সমার্থক আরবী প্রতিশব্দও করা যায় না। এই প্রথার অনুপ্রবেশ ঘটেছে নবীর মৃত্যুর (তাঁর প্রতি শান্তি)প্রায় সাড়ে পাঁচ শত বছর পর। আসলে লায়লাতুল ক্বাদরকে মধ্য শবানের শবে বরাতে পরিণত করা হয়েছে। দুঃখজনক হলেও সত্য যে লায়লাতুল ক্বদর নিয়েও বিভ্রান্তি রয়েছে।
(৩) শবে বরাতের পক্ষে সূরাহ দুখানের(অধ্যায়-৪৪) ৩-৫ আয়াত রেফারেন্স হিসেবে দাঁড় করানোর চেষ্টা করা হয়, কিন্তু এই আয়াতগুলিতে কী বলা হয়েছে?
‘নিশ্চয়, আমি একে (কুর’আন)নাযিল করেছি এক মহিমান্বিত রাতে, নিশ্চয় আমি সতর্ক করে দেই।’
এখানে কুর’আন নাযিল সম্পর্কে বলা হয়েছে, শাবান মাসের ১৫ তারিখের ‘শবে বরাত’ সম্পর্কে কিছুই বলা হয় নি। কাজেই এটি না বুঝে উপস্থাপিত একটি ভুল রেফারেন্স।
কুর’আনের নানা প্রসংগে নানা আয়াত নাযিল হয়েছে। ঐ আয়াতগুলির প্রতি একটু মনোযোগ দিলে উপলব্ধি করা সম্ভব, আল্লাহর ক্ষমা কীভাবে পাওয়া সম্ভব। মন্দ কাজের বিপরীতে অনুশোচনা ও ভালো কাজের মাধ্যমেই ক্ষমা লাভ করা সম্ভব। বছরের কোনো একটি দিন আল্লাহ ভাগ্য রচনা করেন, কাজেই সেদিনের জন্য অপেক্ষায় থাকো, সেদিন রাতভর সালাত ও কুর’আন পাঠে মগ্ন থাকো- এমন অদ্ভুত কল্পনায় বিভোর না থেকে, বরং আত্ম-প্রবঞ্চনার পথ পরিহার করে আত্মশুদ্ধির পথ ধরে পরকালের জন্য কাজ করে যাওয়াই উচিত। আল্লাহ বলেছেন:-
'সে দিন মানুষ বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে এগিয়ে যাবে, যাতে তাদের কৃতকর্ম দেখতে পায়।'
'তারপর কেউ কণা পরিমাণ সৎকর্ম করলেও তা দেখতে পাবে।'
'আর কণা পরিমাণ মন্দ কর্ম করলেও তা দেখতে পাবে।'-সুরাহ আয-যালযালাহ,৯৯ঃ৬-৮
‘তোমরা যদি প্রকাশ্যে দান করো, তা ভালো, আর যদি তা গোপনে করো ও অভাবগ্রস্তদেরকে দাও, তা আরও ভালো, এতে (দানের কারণে)তোমাদের কিছু পাপমোচন হবে; আর তোমরা যা কিছু করো আল্লাহ তা জানেন।’ -সুরাহ বাক্বারাহ(অধ্যায়-২),আয়াত-২৭১
‘তাদেরকে সৎপথে আনার দায়িত্ব তোমার নয়, বরং আল্লাহ যাকে ইচ্ছা সৎপথে পরিচালনা করেন; আর যা কিছু ভালো তোমরা ব্যয় করো সে তো নিজেদের কল্যাণের জন্যই করো, তোমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি ছাড়া অন্য কোনো উদ্দেশ্যে ব্যয় করো না; কল্যাণমূলক যা কিছু তোমরা ব্যয় করো তার প্রতিদান পুরোপুরি দেয়া হবে, আর তোমাদের প্রতি কোনো অন্যায় করা হবে না।’-সুরাহ বাক্বারাহ(অধ্যায়-২),আয়াত-২৭২
‘যারা নিজেদের সম্পদ রাতে ও দিনে, গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, নিশ্চয় তাদের পুরষ্কার আছে তাদের প্রতিপালকের কাছে; আর তাদের কোনো ভয় নেই, তারা দুঃখিতও হবে না।’ -সুরাহ বাক্বারাহ(অধ্যায়-২),আয়াত-২৭৪
'যে সৎকর্ম করে সে নিজের জন্যই করে,আর যে অসৎকর্ম করে তা তার নিজের বিরুদ্ধেই যাবে, এবং তারপর তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের দিকে প্রত্যাবর্তিত হবে।'-সূরাহ জা'থিয়া (অধ্যায়-৪৫),আয়াত-১৪,১৫
‘এরা সে সব মানুষ যাদের সৎকর্মসমূহ আমি গ্রহণ করি, এবং তাদের যাবতীয় গুনাহ আমি মাফ করে দিবো, এরাই বেহেশতবাসীর অন্তর্ভুক্ত হবে, তাদেরকে প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি সত্য প্রমাণিত হবে।’-সুরাহ আহক্বা-ফ (অধ্যায়)-৪৬, আয়াত-১৫-১৬
‘আল্লাহ মানুষের উপর কোনো অবিচার করেন না, বরং মানুষ নিজেই নিজের উপর অবিচার করে।’-সুরাহ ইউনুস(অধ্যায়-১০),আয়াত-৪৪
'ও বিশ্বাসী গণ! আল্লাহর দিকে ফিরে এসো, আন্তরিক অনুশোচনায়।হয়তোবা তোমাদের পালনকর্তা তোমাদের মন্দ কর্মসমূহ মুছে দেবেন আর তোমাদের বেহশতের বাগানে প্রবেশ করাবেন, যার তলদেশে প্রবাহিত নদীর স্রোতধারা। সেদিন আল্লাহ নবী ও তাঁর সাথে যারা বিশ্বাসী তাদের অপদস্ত করবেন না। তাদের জ্যোতি(নূর)তাদের সামনে ছুটোছুটি করবে আর তাদের ডান দিকে; তারা বলবেঃ হে আমাদের পালনকর্তা,আমাদের জ্যোতিকে পূর্ণ করে দিন আর আমাদের ক্ষমা করুন! নিশ্চয় আপনি সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান (সব কিছু করতে সক্ষম)।’-সূরাহ তাহরিম (অধ্যায়-৬৬),আয়াত-৮
‘আর তারা যখন কোনো অন্যায় করে ফেলে বা নিজেদের প্রতি জুলুম করে, তখন আল্লাহকে স্মরণ করে ও স্বীয় পাপের জন্য ক্ষমা চায়; আর ক্ষমা কেইবা করতে পারে আল্লাহ ছাড়া? তারা জেনে শুনে কাজের ওপর জিদ ধরে না।’ -সূরাহ ৩ সুরাহ ইমরান, আয়াত-১৩৫
'ধৈর্য ও প্রার্থণার মাধ্যমে সাহায্য কামনা করো; বাস্তবিকই তা কঠিন,(অনুগত) বিনয়ীরা ছাড়া।' -সুরাহ বাক্বারাহ, অধ্যায়-২, আয়াত-৪৫
‘বলুন, হে বান্দারা তোমরা যারা নিজেদের প্রতি অবিচার করেছো, আল্লাহর দয়া(ক্ষমা, রহমত) হতে নিরাশ হয়ো না, নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের সব পাপ ক্ষমা করে দিবেন, তিনি পরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।'-সুরাহ যুমার, আয়াত-৫৩
'যে অবস্থায় তোমরা আছো সে অবস্থায় আল্লাহ মু’মিনদের ছাড়তে পরেন না; যতোক্ষণ না পবিত্র হতে অপবিত্র পৃথক করতে পারেন; আল্লাহ এমন নন যে, তিনি তোমাদেরকে খবর দেবেন অদৃশ্যের; তবে আল্লাহ রাসুলদের মধ্য হতে ইচ্ছেমতো বেছে নেন, অতএব আল্লাহ ও রাসুলদের বিশ্বাস করো; যদি তোমরা ঈমান আনো আর ভয় করো তবে তোমাদের জন্য রয়েছে বড় প্রতিদান।'-সুরাহ ইমরান, আয়াত-১৭৯ আয়াত-১৭৯
'একজন রসুল যিনি তোমাদের কাছে আল্লাহর সুস্পষ্ট আয়াত সমূহ পাঠ করেন, যেনো তিনি বিশ্বাসী ও সৎকর্মশীলদের অন্ধকার থেকে আলোয় নিয়ে আনতে পারেন; আর যে আল্লাহকে বিশ্বাস করে আর সৎকর্ম করে, তিনি তাকে এমন বেহেশতে আনবেন যার নিচে প্রবাহিত নদী, সেখানে হবে চিরকালের বাস; আল্লাহ তার জন্য উত্তম ব্যবস্থা রেখেছেন।'-সুরাহ তালাক্ব, অধ্যায়-৬৫, আয়াত-১১
'হে বিশ্বাসীগণ তোমরা সশ্রদ্ধ নতশীর হও (রুকু করো), আর গভীর শ্রদ্ধাভরে প্রণত হও (সেজদা করো), আর তোমাদের পালনকর্তার এবাদত করো, আর সৎকর্ম করো, যেনো তোমরা সফলকাম হতে পারো।'-সূরাহ হজ্জ, (অধ্যায়-২২),আয়াত-৭৭
'তোমাদের উপর যেসব বিপদ আপদ নেমে আসে তা তোমাদের কর্মেরই ফল; তিনি অধিকাংশই ক্ষমা করে দেন।' -সূরাহ আশ-শুর'আ, ৪২ঃ৩০
‘আর যারা আমার নিদর্শনসমূহে(আয়াতসমূহে) বিশ্বাস করে তারা যখন আপনার কাছে আসবে, তখন বলুনঃ তোমাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক! তোমাদের পালনকর্তা নিজ দায়িত্বে করুণার বিধি দিয়েছেন, যদি তোমাদের মাঝে কেউ না জেনে কোনো অন্যায় করে, পরমুহূর্তে অনুশোচনা করে,আর নিজেকে সংশোধন করে নেয়, তবে নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল,করুণাময়!’-সূরাহ আন'আম(অধ্যায়-৬),আয়াত-৫৪
‘কেনো তারা আল্লাহর দিকে অনুতপ্ত হয়ে ফিরে আসে না, আর ক্ষমা প্রার্থণা করে না? কেননা আল্লাহতো ক্ষমাশীল, দয়ালু।’-সূরাহ মা'ইদাহ (অধ্যায়-৫), আয়াত-৭৪
'মানুষ কি মনে করে যে, তারা একথা বলেই অব্যাহতি পেয়ে যাবে যে, আমরা বিশ্বাস করি আর তাদেরকে পরীক্ষা করা হবে না?' -সুরাহ আল-আনকাবুত(অধ্যায়-২৯), আয়াত-২
'আর সকলের জন্য তাদের কৃতকর্ম অনুযায়ী বিভিন্ন (মর্যাদার) স্তর রয়েছে, যাতে আল্লাহ তাদের কর্মের পূর্ণ প্রতিফল দিতে পারেন; এবং তাদের প্রতি কোনো অবিচার হবে না।' -সূরাহ আহক্বাফ(অধ্যায়-৪৬),আয়াত-১৯
‘আর আমি প্রতিটি মানুষের ভাগ্যকে তার জন্য গলার হার করে রেখেছি, আর পুনরুত্থানের দিনে আমি তার জন্য বই বের করবো যা সে খোলা পাবে।’
‘বই পাঠ করো, আজ তোমার হিসাবের জন্য তুমি নিজেই যথেষ্ঠ।’-সুরাহ আল-ইসরা অধ্যায় ১৭ আয়াত ১৩,১৪
(পুরোনো লেখা।)
Comments
Post a Comment