অপব্যাখ্যাত আয়াত ৫ঃ৮২-‘বিশ্বাসীদের প্রতি বিরোধিতায় মানুষের মাঝে ইহুদী ও মুশরিকরাই সবচেয়ে উগ্র’ –এশি আয়াতের মর্মার্থ কী সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ?--আইনুল বারী
৮২.অপব্যাখ্যাত আয়াত ৫ঃ৮২-‘বিশ্বাসীদের প্রতি বিরোধিতায় মানুষের মাঝে ইহুদী ও মুশরিকরাই
সবচেয়ে উগ্র’ –এশি আয়াতের মর্মার্থ
কী সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ?
-আইনুল বারী
-- --- --- ----
‘নিশ্চয় তুমি দেখবে বিশ্বাসীদের প্রতি বিরোধিতায় মানুষের মাঝে ইহুদী ও
মুশরিকরাই সবচেয়ে উগ্র ; আর যারা বলে ‘আমরা খৃষ্টান’ তাদেরকে বিশ্বাসীদের প্রতি অধিক
বন্ধুত্বসুলভ দেখবে, কারণ এদের মাঝে ধর্মযাজক ও ভিক্ষু রয়েছে, যারা কোনো অহংকারী নয়।’-সূরাহ
মাইদাহ(অধ্যায়-৫),আয়াত-৮২
-এই আয়াতটির অপব্যাখ্যা করা হয় এভাবে যে কুর'আনের আছে ইহুদী ও মুশরিকরা মুসলমানদের
চির শত্রু। এই ব্যাখ্যা যেমন সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন মুসলমানদের মনস্তত্ত্বে গেঁথে আছে, তেমনি কিছু ইসলাম বিদ্বেষীরাও তেমনি মনে করেন যে, কুর'আন মুসলমানদের সাম্প্রদায়িক হতে শিক্ষা দেয়। কিন্তু আয়াতটির মর্মার্থ কি তেমন নির্দেশ করে?
এই আয়তে
বাস্তবতার একটি ভবিষ্যৎবাণী করা হয়েছে মাত্র, কোথাও
পালটা সাম্প্রদায়িক প্রতিশো্রাধপরায়ন হতেতো বলা হয়নি। কুর'আনের উল্লেখযোগ্য আয়াত আছে যা থেকে আমরা বুঝতে পারি শুধু অবিশ্বাসের কারণে কোনো সম্প্রদায়ের প্রতি সাম্প্রদায়িক হিংসা-বিদ্বেষ পোষণ করা উচিত নয়, এমন কিছু করা উচিত নয় যাতে কোনো সম্প্রদায়ের ক্ষতি হয় এবং পরে সেজন্যে অনুশোচনা হয়।
এ ছাড়া
আয়াতটি কেয়ামত পর্যন্ত একটি চ্যালেঞ্জও বটে। ইহুদী ও
মুশরিক সম্প্রদায়ের লোকেরা মুসলমানদের প্রতি খৃষ্টানদের চেয়েও অধিক বন্ধুত্বসুলভ সম্পর্ক তৈরি করে
প্রমাণ করতে পারেন তারা মুসলমানদের প্রতি তাদের বেশি আন্তরিক। তাহলেই
কুর'আন মিথ্যা প্রমাণিত হয়ে যায়। সেদিক থেকে আয়াতটি একটি ভবিষ্যৎ বাণী মিরাকেল আয়াত।
এখন তারপরও প্রশ্ন থেকে যায়, আয়াতটি মুসলমানদের কী শিক্ষা দেয় সাম্প্রদায়িক ঘৃণার জন্ম দেয়া ছাড়া? আয়াতটির ঐতিহাসিক পটভূমি যদি দেখি, যদি আয়াতটির আগে পরের আয়াতগুলি পড়ি, আমরা এম্মন কিছুই পাবো না, এর মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ পোষণ করা হয়েছে। শুধু বিশ্বাসীদেরকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে একটি বাস্তবতার সত্যকে। এই সত্য জেনে নিজের মনকে দৃঢ় রাখা উচিত, বিশ্বাস ও প্রত্যাশাকে সীমিত রেখে বাস্তববাদী হওয়ার জন্যে একটি শিক্ষা এটি। এর মানে এই নয় কোনো নির্দোষ ইহুদী বা হিন্দুর প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করতে হবে। যদি তেমন কিছু মনে চলে আসে, তার মানে আমাদের এখনো যথেষ্ট আত্ম-শুদ্ধি হয়নি। আমি এভাবেই বুঝেছি, আল্লাহই সব চেয়ে ভালো জানেন।
Comments
Post a Comment