মোল্লাতন্ত্র বনাম ইসলাম-অন্যায় নিষিদ্ধের তালিকা নিমিষে বাতিল হয়ে যায়। -আইনুল
২৩.অন্যায়
নিষিদ্ধের তালিকা নিমিষে বাতিল হয়ে যায়।
-আইনুল বারী
--- -- --
মোল্লাতন্ত্র বনাম ইসলাম-
অন্যায় নিষিদ্ধের তালিকা নিমিষে বাতিল হয়ে যায়।
--- -- --
তারা বলে,
ইসলাম ধর্মে কবিতা লেখা হারাম,কবিরা বিভ্রান্ত।
বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে গান গাওয়া ও শোনাও হারাম।(তবে বাদ্য যন্ত্র বিহীন ইসলামী গান গ্রহণযোগ্য।)
নৃত্য-চিত্র কলা নিষিদ্ধ।
অভিনয়তো ভয়াবহ ব্যাপার!
ছবি তোলা ও ঘরে ছবি টাংগানো হারাম।
গৃহপালিত কুকুর রাখা হারাম, কুকুর আছে এমন গৃহে ফেরেশতা প্রবেশ করেন না।
বিয়ের আগে ছেলে-মেয়ের প্রেম ও বন্ধুত্ব হারাম।
শুধু হিজাব সম্পূর্ণ শালীনতা নয়।আপাদমস্তক বোরখা-হিজাব-নিক্বাবে ঢেকে ফেলতে হবে।
নারীরাই প্রধান ফিনতা সৃষ্টিকারী। তারা বেশির ভাগই দোযখে যাবে।
জন্মনিয়ন্ত্রণ করা হারাম।
বাংলা ভাষার চেয়ে আরবী ভাষার মর্যাদা বেশি ও আরবীতে কুর'আন পড়ায় পূণ্য বেশি। আরবী বেহেশতী ভাষা।
দেশজ সংস্কৃতি,জাতীয় উৎসব ও দিবস পালন করা নিষিদ্ধ।
শ্রদ্ধায় বেদীতে ফুল দেয়া হারাম।
স্মৃতিসৌধ, মূর্তি ও ভাস্কর্য স্থাপন হারাম ও জঘন্য শিরকের কাজ।
যাকাত -সদকা দিতে হবে কেবল মুসলমানকেই।
ইহুদী,খৃষ্টান,মূর্তি পূজারীরা মুসলমানদের স্বাভাবিক শত্রু। এদেরকে বিশ্বাস নেই।
কুর'আন ও হাদিসের কোনো কথা নিয়ে নিজে নিজে ব্যাখ্যা করা বা সন্দেহ বা প্রশ্ন করা ধৃষ্টতার পর্যায়ে পড়ে।
রাসুল(সাঃ) যা করেন নি, তা করা যাবে না, তিনি যা বলেন নি তা এড়িয়ে চলাই উচিত। কুর'আন-হাদিসের ব্যাখ্যার ও ফতোয়া জারি করার একচ্ছত্র এখতিয়ার হাফেজ, মাওলানা, মুফতি, ইমাম সাহেবদের, তথা মোল্লাতন্ত্রের।
এ তালিকা বেশ দীর্ঘ...
অথচ আল্লাহ তাঁর ঐশী গ্রন্থে সৃষ্টিকে ভালোবাসার কথা বলেন
সত্য ও সততার জীবন যাপনের কথা বলেন
প্রজ্ঞা ও বিচক্ষণতার কথা বলেন
হৃদয়,বোধ-বিবেকের কথা বলেন
ক্ষমা ও অনুশোচনার কথা বলেন
শান্তি ও সম্প্রীতির কথা বলেন
উন্নয়ন, কল্যাণ ও নায়বিচারের কথা বলেন
ধৈর্য,সহনশীলতা, সহানুভূতির কথা বলেন
আত্মত্যাগ,আত্মশুদ্ধির ক্রমাগত প্রচেষ্টার কথা বলেন
সংযম, উদারতা, সদিচ্ছা ও উত্তম নৈতিকতার কথা বলেন
বিজ্ঞানময়তা,দার্শনিকতা, আধাত্ম্যবাদের কথা বলেন
জাতি, গোত্র, বর্ণ,ভাষার স্বাতন্ত্র্য, স্বীকৃতি ও অধিকারের কথা বলেন
চক্রান্তকারী, অশুভের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের কথা বলেন
অবোধ প্রাণ,নিরীহ আত্মাকে রক্ষার কথা বলেন
পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি না করে শান্তির পথ নির্মাণের কথা বলেন।
তা হলে,
যে কবিতা,গান,চিত্রকর্ম,নৃত্যকলা মানবতার কথা বলে ও কল্যাণের দিকে ডাকে তা কেনো মুসলমানদের জন্য নিষিদ্ধ হবে?
আমার গৃহে নিরীহ বিশ্বস্ত প্রাণী কুকুর থাকলে কেনো ফেরেশতা প্রবেশ করবেন না?
কুকুরও আল্লাহর সৃষ্টি, আমাদের মতোই উম্মত। তারাও আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করে।
যে সমাজে পুরুষরাই বেশি অপরাধ করে সেখানে নারীদের উপর কেনো এমন অভিসম্পাত? আমাদেরর মা, আমার স্ত্রী,বোন, কন্যা আছেন। তারা নারী। আল্লাহ তাদের সবাইকে কতো সম্মান ও মর্যাদা দিয়েছেন!
শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার বেদীতে ফুল দেয়া কেনো শিরক করা হবে? মূর্তি ও ভাস্কর্যে যদি দেবত্ব আরোপ করা না হয় তাতে কী অপরাধ?
দতার চেয়ে বড় শিরক আজ জীবন্ত মানুষ-দেবতারা নয়?
হিন্দু-খৃষ্টান-ইহুদীদের মধ্যে ভালো মানুষ নেই? কেনো ঘৃণা করবো তাদেরকে? ঘৃণার শিক্ষা আল্লাহতো দেন নি। তা হলে কেনো সাম্প্রদায়িক হতে হবে?
কেনো ইসলামের জ্ঞান বুঝতে একচ্ছত্র অধিকার এক শ্রেণীর মোল্লাদের জন্যই নির্ধারিত? যখন আত্মোপলবদ্ধি ছাড়া কি জ্ঞান লাভ সম্ভব নয়? আর যদি আল্লাহর ইচ্ছাই সব চেয়ে বড়? তাহলে ব্যক্তি মানুষের সাথে তার প্রতিপালকের ব্যাক্তিগত সম্পর্ক কীভাবে নিবিড় হবে?
এভাবেই অন্যায় নিষিদ্ধের দীর্ঘ তালিকা নিমিষে বাতিল হয়ে যায়।
Comments
Post a Comment