প্রকৃতি, পরিবেশ ও প্রাণীকুল সম্পর্কে কুর’আনের কতিপয় আয়াত -আইনুল বারী

৭৬.প্রকৃতি, পরিবেশ ও প্রাণীকুল সম্পর্কে  কুরআনের কতিপয় আয়াত
-আইনুল বারী
--         ---             ----

পরিবেশ ও প্রাণীকুলের প্রতি সচেতন হয়ে উঠার দিক-নির্দেশনা রয়েছে আল্লাহর।মানুষের বোধগম্যতার জন্য রয়েছে কুরআনের কতিপয় আয়াত। যে কোনো প্রাণীই মানব জাতির মতোই এক একটি উম্মত বা জাতি। তাদেরও রয়েছে এবাদত নিজস্ব এবাদত পদ্ধতি। প্রাণীজগত ও প্রকৃতি রাজ্যের সব কিছুরই রয়েছে আল্লাহ সচেতনতা, তারা সবাই মহান সৃষ্টিকর্তা ও প্রতিপালকের মহত্ব অনুধাবন করে ও প্রচার করে।প্রাণীজগতেরও আছে ভাষাবোধ ও বুদ্ধিবৃত্তির অনুশীলন। কিন্তু মানুষ তাদের প্রতি কতোটুকু সচেতন ও দায়িত্বশীল?

নিশ্চয়, আমি আকাশ,পৃথিবী ও পর্বতমালার সামনে এই (বিশ্বাসের, নৈতিকতার)আমানত পেশ করেছিলাম, কিন্তু তারা তা বহন করতে অস্বীকার করলো ও এতে ভীত হয়ে পড়লো; কিন্তু মানুষ (সে দায়িত্ব নিতে) তা গ্রহণ করলো; নিশ্চয় সে স্বেচ্ছাচারী ও অজ্ঞ হিসেবে পরিগণিত হলো।’-সূরাহ আহযাব(অধ্যায়-৩৩),আয়াত-৭২

স্থলে ও পানিতে মানুষের কৃতকর্মের দরুণ বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে। আর আল্লাহ তাদেরকে তাদের কৃতকর্মের কিছু অংশের ফলাফল আস্বাদন করাতে চান, যেনো তারা ফিরে আসে।’-সূরাহ রূম, আয়াত-৪১

'বলুন, তোমরা ভেবে দেখেছো কি, যদি তোমাদের পানি ভূগর্ভের গভীরে চলে যায়, তবে কে তোমাদেরকে সরবরাহ করবে পানির স্রোতধারা?'-সুরাহ আল-মূলক(অধ্যায়-৬৭),আয়াত-৩০

আপনি কি দেখেন না, জগতরাশি (নভোমন্ডল) ও পৃথিবীতে যারা আছে তারা সবাই, আর উড়ন্ত পাখিরা প্রত্যেকে আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা ঘোষণা করে? প্রত্যেকেরই এবাদত পদ্ধতি ও তসবিবিদ্যা (আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনার উপায়) জানা আছে। আর আল্লাহ তাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে সর্বজ্ঞাত।’-সুরাহ নূর(অধ্যায়-২৪), আয়াত-৪১

আর এমন কোনো প্রাণী নেই এ পৃথিবীর অথবা কোনো পাখি যা ডানায় ভর করে উড়ে কিন্তু তারা সবাই তোমাদের মতো এক একটা জাতি(উম্মত)।গ্রন্থে কোনো কিছু সম্পর্কেই উপেক্ষা করা হয় নি। পরে তারা সবাই তাদের প্রতিপালকের কাছে সমবেত হবে।’-সুরাহ আন'আম(অধ্যায়-৬), আয়াত-৩৮

যতোক্ষণ না তারা পিপীলিকা উপত্যকায় পৌঁছুলো,আর তখন এক পিপীলিকা বলে উঠলোঃ ওহে পিপীলিকারা! তোমরা তোমাদের ঘরে ঢোকো,পাছে সুলায়মান ও তার বাহিনী অজ্ঞাতসারে তোমাদেরকে না পিষ্ট করে ফেলে।’ -সূরাহ আন-নামল(অধ্যায়)-২৭) আয়াত- ১৮

'আমি পর্বতমালাকে তার অনুগামী করলাম, তারা সকাল-সন্ধ্যায় তার সাথে মহিমা(পবিত্রতা) ঘোষণা করতো।' 'আর পক্ষীকুলকেও, তার কাছে সমবেত হতো; সবাই ছিল তাঁর কাছে ফিরে আসতো।' -সূরাহ সাদ, ৩৮ঃ১৮,১৯

সে (হুদ হুদ পাখি)বেশি দেরি করলো না এসে বললো, আমি যা জানি আপনি তা জানেন না, দৃঢ় খবর নিয়ে সাবা (বর্তমানে ইয়েমেন) হতে এসেছি।আমি একজন নারীকে তাদের ওপর রাজত্ব করতে দেখেছি, সে প্রত্যেক প্রকার সাজ-সরঞ্জাম প্রাপ্ত। আর সে এক বিরাট সিংহাসনের অধিকারী।
আমি তাকে ও তার লোকজনকে আল্লাহর পরিবর্তে সূর্যের উপাসনায় লিপ্ত থাকতে দেখেছি। আর শয়তান তাদের কর্মকান্ডকে সুশোভিত করে রেখেছে, এবং তাদেরকে বাধা দিচ্ছে, তারা পথ পায় না।
যেনো তারা আল্লাহকে সেজদা না করে, যিনি আকাশ ও ভূ-মন্ডলের লুকায়িতকে প্রকাশ করেন, যিনি তোমাদের গোপন- প্রকাশ্য জানেন।আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই। তিনি মহান আরশের প্রতিপালক।'-সুরাহ আন-নামল, আয়াত-২২-২৬

আর আমি দাউদকে সুলায়মান দিলাম, কতো উত্তম এক বান্দা! সে ছিলো নিয়ত (অনুশোচনায়) প্রত্যাবর্তনকারী। যখন এক বিকেলে তার সামনে আনা হলো প্রশিক্ষিত দ্রুতগামী অসাধারণ ঘোড়াগুলি,
তখন সে বললোঃ হায়! আমিতো আল্লাহর স্মরণ ভুলে পৃথিবীর সুন্দর জিনিসগুলির প্রতি মুগ্ধতায় আচ্ছন্ন হয়ে রইলাম, যে পর্যন্ত না বেলা গড়িয়ে গেল, আর সূর্য ডুবে গেছে। তারপর সে বললোঃ এদেরকে আমার কাছে নিয়ে এসো, এরপর সে ওদের পা ও গলায় মৃদুঘাত করে আদর করে দিলো।’-সূরাহ সাদ(অধ্যায়-৩৮) আয়াত-৩০-৩৩

Comments

Popular posts from this blog

'শুন হে মানুষ ভাই, সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই।' : আমি মানুষ বনাম আমি মুসলমান-আইনুল বারী

অপব্যাখ্যাত আয়াত ৪ঃ৩৪- স্ত্রীকে প্রহার করা কি ইসলামে অনুমোদিত?-আইনুল বারী

সত্য অনুসন্ধানী ধার্মিকের চোখে নাস্তিক্যবাদী সংশয় ঘৃণার বস্তু নয়, কেননা জ্ঞানের সংশয়ে পাপ নেই, জ্ঞান চর্চায় ঘৃণা বিদ্বেষের প্রয়োজন নেই -আইনুল বারী