আল্লাহের নিদর্শন-১ -আইনুল বারী

৭৩.আল্লাহের নিদর্শন-১
-আইনুল বারী
-- ---- ---- -- -------

অবিশ্বাসীরা আল্লাহর অস্তিত্বের পক্ষে, নবী-রাসুলগণের
কাছে অবতীর্ণ ঐশী সত্যের পক্ষে প্রামাণিক নিদর্শন দেখতে চান। তারা চান তাদের কাছেও নবী-রাসুলদের মতোই দৈব-নিদর্শন আসুন, তবেই তাদের আল্লাহতে বিশ্বাস হবে। তাদের সম্পর্কে কুরআনে উল্লেখ আছে এভাবে,
'আর যাদের কোনো জ্ঞান নেই( যারা জানে না) তারা বলেঃ আল্লাহ কেনো আমাদের সংগে কথা বলেন না অথবা আমদের কাছে কোনো নিদর্শন আসে না? এমনকি তাদের পূর্ববর্তীরাও এমনই বলেছিলো; তাদের অন্তর একই রকম। বস্তুত আমি দৃঢ় বিশ্বাসীদের কাছে নিদর্শনসমূহ (আয়াত সমূহ) সুস্পষ্ট করি।' -সূরাহ বাক্বারাহ, অধ্যায়-২, আয়াত-১১৮
তারা বলেঃ তার প্রতি তার পালনকর্তার পক্ষ হতে কোন লক্ষণ(নিদর্শন হিসেবে) অবতীর্ণ হয়নি কেন? বলুনঃ আল্লাহ নিদর্শন অবতরণ করতে সক্ষম, কিন্তু তাদের অধিকাংশই জানে না।’-সূরাহ আন'আম(অধ্যায়-৬),আয়াত-৩৭
নবী-রাসুলদের কাছে যুগে যুগে বিভিন্ন পরিস্থিতি ও বিষয়কে অনুধাবন করার জন্য প্রত্যাদেশ ও অলৌকিক নিদর্শন আকারে ঐশী সত্য এসেছে, আর এসেছে তা অনুধাবন করার মতো প্রজ্ঞা, আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহে ও দায়িত্বের প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গ হিসেবে। কিন্তু চিন্তাশীল মানুষের জন্য প্রকৃতির মধ্যেই আল্লাহ তাঁর অস্তিত্ব অনুধাবনের মতো অসংখ্য নিদর্শন ছড়িয়ে ছিটিয়ে রেখেছেন, যা আমরা ভেবে দেখি না, কদাচিত অনুধাবন করি, অথচ অস্বীকার করি। আল্লাহ কুরআনে নানা উপমা দিয়ে নানাভাবে সে সব নিদর্শনের বর্ণনা দিয়েছেন।
এখানে প্রকৃতির মাঝে বিরাজমান, মানুষের নানা ঘটনার মাঝে সংকেতায়িত নিদর্শনের তেমন কিছু আয়াত তুলে ধরা হলো, আল্লাহ চাইলে সে সব নিদর্শন নিয়ে ভাবতে গিয়ে আমাদের বোধ-বিবেক জেগে উঠবেঃ
আল্লাহ বলেছেন,
'আর নিশ্চয় আমি মানুষের জন্য এ কুরআনে সব রকম উপমা দিয়ে বর্ণনা করেছি; কিনতু মানুষ অধিকাংশ বিষয়ে তর্কপ্রিয়।'-সূরাহ কাহফ, (অধ্যায়-১৮), আয়াত-৫৪
যারা আমার নিদর্শনসমূহ(আয়াতসমূহ) অস্বীকার করে তারা অন্ধকারে নিমজ্জিত মূক ও বধির। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা করেন পথভ্রষ্টতায় চলতে দেন, আর যাকে ইচ্ছা করেন সরল পথে পরিচালিত করেন।’-সূরাহ আন'আম(অধ্যায়-৬),আয়াত-৩৯
আল্লাহ প্রকৃতির মধ্য থেকেই তাঁর নিদর্শন বর্ণনা করেন এভাবে,
তিনিই আল্লাহ, যিনি নভোমন্ডল ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন, আর আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেন, তা দিয়ে তোমাদের জন্য খাদ্য হিসেবে ফল উৎপাদন করান, আর নৌযানসমূহকে তোমাদের সেবায় নিয়োজিত করেছেন, যেনো তাঁর আদেশে সমুদ্রে চলাচল করে, আর তোমাদের সেবায় নিয়োজিত(উপযোগী) করেছেন নদীসমূহ।’-সূরাহ ইব্রাহীম(অধ্যায়-১৪),আয়াত-৩২
আর তিনি সূর্য ও চন্র্ছকে তোমাদের সেবায় নিয়োজিত করেছেন, উভয়ে নিরবচ্ছিন্ন নিজেদের পথে চলে, রাত ও দিনকে তোমাদের সেবায় লাগিয়েছেন।’-সূরাহ ইব্রাহীম(অধ্যায়-১৪),আয়াত-৩৩
আর যে সকল বস্তু তোমরা চেয়েছো, তার সবই তিনি তোমাদেরকে দিয়েছেন; আর তোমরা যদি আল্লাহর অনুগ্রহ(নেয়ামত) গণনা করো, তা গুণে শেষ করতে পারবে না; নিশ্চয় মানুষ অত্যন্ত অন্যায়কারী, অকৃতজ্ঞ।’ -সূরাহ ইব্রাহীম(অধ্যায়-১৪),আয়াত-৩৪
তিনি তোমাদের জন্য আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেন, এ থেকে তোমরা পান করো, আর এ থেকেই উদ্ভিদকূল জন্মায়, যেখানে তোমরা পশুচারণ করো।’-সূরাহ নাহল(অধ্যায়-১৬), আয়াত-১০
ওভাবেই তিনি তোমাদের জন্যে ফলান শস্য, যয়তুন, খেজুর, আঙ্গুর ও সব ধরণের ফল। নিশ্চয় চিন্তাশীলদের জন্য এতে নিদর্শন রয়েছে।’ -সূরাহ নাহল(অধ্যায়-১৬), আয়াত-১১
আর নিশ্চয় গবাদি পশুর মধ্যেও তোমাদের জন্যে শিক্ষা রয়েছে; আমি তোমাদেরকে পান করাই তাদের উদরস্থ থেকে, নিঃসরিত বর্জ্য ও রক্ত থেকে, বিশুদ্ধ দুধ, যা উপাদেয় পানকারীদের কাছে।’-সূরাহ নাহল (অধ্যায়-১৬)-আয়াত-৬৬
আর খেজুর ও আংগুর ফল থেকে, তোমরা তৈরি করো কড়া পানীয়(মাদক)ও উত্তম খাবার; এতে নিশ্চয় বোধ সম্পন্ন লোকেদের জন্যে নিদর্শন রয়েছে।’-সূরাহ নাহল (অধ্যায়-১৬)-আয়াত-৬৭
আর আপনার প্রতিপালক মৌমাছিকে শিক্ষা দিয়ে বললেনঃ মৌচাক গড়ো পাহাড়ে, গাছে ও মানুষের বসতিতে।’ -সূরাহ নাহল (অধ্যায়-১৬)-আয়াত-৬৮
তারপর সব রকমের ফল আহার করো, আর তোমার প্রতিপালকের সরল পথে চলো; তার উদর থেকে নির্গত হয় বিভিন্ন বর্ণের পানীয়, তাতে আছে মানুষের জন্যে রোগের প্রতিকার; নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল মানুষের জন্যে আছে নিদর্শন।’ -সূরাহ নাহল (অধ্যায়-১৬)-আয়াত-৬৯
আর তিনি তোমাদের সেবায় নিয়োজিত করেছেন রা্ত, দিন, সূর্য ও চন্দ্রকে, আর নক্ষত্র সমূহ সেবায় নিয়োজিত রয়েছে, তাঁরই নির্দেশে; নিশ্চয় এতে বোধশক্তিসম্পন্নদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে।’ -সূরাহ নাহল(অধ্যায়-১৬), আয়াত-১২
আর তোমাদের জন্য তিনি পৃথিবীতে যা কিছু রং-বেরঙের বস্তু বহু গুণে ছড়িয়ে দিয়েছেন; নিশ্চয় স্মরণকারীদের জন্য তাতে নিদর্শন রয়েছে।’ -সূরাহ নাহল(অধ্যায়-১৬), আয়াত-১৩
তিনিই কাজে নিয়োজিত করেছেন সমুদ্রকে, যেনো তা থেকে তোমরা কোমল তাজা মাংস খেতে পারো ও তা সেঁচে বের করতে আনতে পা্রো অলঙ্কারাদি তোমাদের পরিধেয় সজ্জার জন্য; আর তুমি নৌযানসমূহকে এর বুক চিরে চলতে দেখো, যেনো তোমরা আল্লাহর প্রাচুর্যময় অনুগ্রহের সন্ধান করতে পারো, আর যেনো (অনুগ্রহ স্বীকার করে তাঁর প্রতি) কৃতজ্ঞ হও।’ -সূরাহ নাহল(অধ্যায়-১৬), আয়াত-১৪
আর তিনি পৃথিবীর উপর দৃঢ়ভাবে স্থাপন করেছেন পর্বতমালা, যেনো তা তোমাদেরকে নিয়ে হেলে না পড়ে; আর নদী ও পথ-ঘাট করে দিয়েছেন, যাতে তোমরা চলাচলের পথ খুঁজে পাও।’ -সূরাহ নাহল(অধ্যায়-১৬), আয়াত-১৫
আর পথ নির্ণয়ক বহু চিহ্ন; আর নক্ষত্রের সাহায্যে যেনো তারা চলাচলের পথের নিশানা পায়।’ -সূরাহ নাহল(অধ্যায়-১৬), আয়াত-১৬
তবে যিনি সৃষ্টি করেন তিনি কি তার সমতূল্য যে সৃষ্টি করে না? তোমরা কি স্মরণ করবে না?’-সূরাহ নাহল(অধ্যায়-১৬), আয়াত-১৭
'নিশ্চয় চক্রান্ত করেছে তাদের পূর্ববর্তীরা, আর তাই আল্লাহ তাদের ভবনের ভিত্তিমূলে আঘাত করেছিলেন। এরপর উপর থেকে তাদের মাথায় ছাদ ধ্বসে পড়েছে আর তাদের উপর ধ্বংস এসেছে যা তাদের ধারণায়ও ছিলো না।'-সূরাহ নাহল (অধ্যায়-১৬)-আয়াত-২৬
আর আমি ভুপৃষ্ঠকে বিস্তৃত করেছি, আর তাতে পর্বতমালা স্থাপন করেছি, আর সেখানে সব ধরণের বস্তু সুপরিমিতভাবে উৎপন্ন করেছি।’-সূরাহ হিজর(অধ্যায়-১৫),আয়াত-১৯
আর আমি তোমাদের জন্য সেখানে জীবিকার উপকরণ সৃষ্টি করেছি, আর তাদের জন্যও যাদের সরবরাহকারী তোমরা নও।’-সূরাহ হিজর(অধ্যায়-১৫),আয়াত-২০
আর এমন কোনো বস্তু নেই যার ভান্ডার আমার কাছে নেই, আর আমি তা পরিমিত পরিমাণেই প্রেরণ করি।’-সূরাহ হিজর(অধ্যায়-১৫),আয়াত-২১
আমি উর্বরতার বাতাস প্রেরণ করি, তারপর আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করি, আর তা তোমাদেরকে পান করাই, আর তোমরাতো এর ভান্ডারী নও।’-সূরাহ হিজর(অধ্যায়-১৫),আয়াত-২২
তিনিই তোমাদের জন্য পৃথিবীকে শয্যাস্বরূপ করেছেন, আর তাতে চলার পথ করে দিয়েছেন, আর আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেন; আর আমি তা দিয়ে নানা জাতের উদ্ভিদ উৎপন্ন করে দিয়েছি।’-সূরাহ তোয়া-হা(অধ্যায়-২০),আয়াত-৫৩
'নিশ্চয় ভূমন্ডলে ও পৃথিবীতে বিশ্বাসীদের জন্য নিদর্শনাবলী রয়েছে।'- সুরাহ জাসিয়াহ(অধ্যায়-৪৫),আয়াত-৩
'আর তোমাদের সৃষ্টিতে, এবং যে সকল বিচরণশীল প্রাণী তিনি ছড়িয়ে দিয়েছেন, তারা নিদর্শন দৃঢ় বিশ্বাসীদের জন্য।'- সুরাহ জাসিয়াহ(অধ্যায়-৪৫),আয়াত-৪
আর দিন ও রাতের পার্থক্যে, আর আল্লাহ আকাশ হতে যে প্রয়োজনীর সরবরাহ(রিযিক) প্রেরণ করেন, তারপর তা দিয়ে জমিনকে এর মৃত্যুর পর পুনর্জীবিত করেন, আর বাতাসের পরিবর্তনে, (এসব কিছুতে) বুদ্ধিমান মানুষের জন্য নিদর্শন রয়েছে।’-সুরাহ জাসিয়াহ(অধ্যায়-৪৫),আয়াত-৫
তাঁর নিদর্শনের মধ্যে রয়েছে আকাশ ও পৃথিবীর সৃষ্টি, তোমাদের ভাষা ও বর্ণের বিভিন্নতা। নিশ্চয়ই এতে রয়েছে, যারা জ্ঞানী তাদের জন্য বহু নিদর্শনাবলী।’-সুরাহ রূম, আয়াত-২২
তুমি কি দেখোনি আল্লাহ আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করেন, আর তা দিয়ে আমি বিভিন্ন রঙের ফল-মূল উৎপাদন করি; আর পর্বতমালার মধ্যে আছে বিভিন্ন রঙের গিরিপথ-শাদা ও লাল ও নিকষ কালো ।
আর একইভাবে রয়েছে বিভিন্ন বর্ণের মানুষ, বিচরণশীল জন্তু, গবাদি পশু? আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে জ্ঞানীরাই কেবল তাঁকে ভয় করে; নিশ্চয় আল্লাহ পরাক্রমশালী, ক্ষমাশীল।’-সুরাহ ফাতির, ৩৫ঃ২৭,২৮
আল্লাহই শস্যদানা ও বীজ(আঁটি) হতে অংকুর উদগমনকারী; তিনি জীবিতকে মৃত থেকে বের করেন ও মৃতকে জীবিত থেকে বের করেন; তিনিই আল্লাহ,অথচ তোমরা কীভাবে বিভ্রান্ত হও?-সূরাহ আন'আম(অধ্যায়-৬),আয়াত-৯৫
তিনি প্রভাত রশ্মির উন্মেষক। তিনি রাত্রিকে আরামদায়ক করেছেন এবং সূর্য ও চন্দ্রকে হিসেবের জন্য রেখেছেন। এটি পরাক্রান্ত, মহাজ্ঞানীর নির্ধারণ।
তিনিই তোমাদের জন্য নক্ষত্রপুঞ্জ সৃজন করেছেন যাতে তোমরা স্থল ও জলের অন্ধকারে পথ প্রাপ্ত হও। নিশ্চয় যারা জ্ঞানী তাদের জন্যে আমি নির্দেশনাবলী বিস্তারিত বর্ণনা করে দিয়েছি।
তিনিই তোমাদের কে এক ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করেছেন। অনন্তর একটি হচ্ছে তোমাদের স্থায়ী ঠিকানা ও একটি হচ্ছে গচ্ছিত স্থল। নিশ্চয় আমি প্রমাণাদি বিস্তারিত ভাবে বর্ণনা করে দিয়েছি তাদের জন্যে, যারা চিন্তা করে।
তিনিই আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেছেন অতঃপর আমি এর দ্বারা সর্বপ্রকার উদ্ভিদ উৎপন্ন করেছি, অতঃপর আমি এ থেকে সবুজ ফসল নির্গত করেছি, যা থেকে যুগ্ম বীজ উৎপন্ন করি। খেজুরের কাঁদি থেকে গুচ্ছ বের করি, যা নুয়ে থাকে এবং আঙ্গুরের বাগান, যয়তুন, আনার পরস্পর সাদৃশ্যযুক্ত এবং সাদৃশ্যহীন। বিভিন্ন গাছের ফলের প্রতি লক্ষ্য করো যখন সেুগুলো ফলন্ত হয় এবং তার পরিপক্কতার প্রতি লক্ষ্য কর। নিশ্চয় এ গুলোতে নিদর্শন রয়েছে ঈমানদারদের জন্যে।’-সূরাহ আন'আম(অধ্যায়-৬),আয়াত-৯৬-৯৯
নিশ্চয়! আকাশ ও পৃথিবীর সৃষ্টিতে, আর রাত ও দিনের আবর্তন, আর সমুদ্র পথে চলাচলরত মুনাফা নিয়ে আসা নৌযানসমূহ, আর আল্লাহ আকাশ থেকে যে পানি বর্ষণ করেন, যা দিয়ে মৃত জমিনকে(পৃথিবীকে) সজীব করেন, আর সেখানে সব ধরণের যেসব পশু-প্রাণীদের ছড়িয়ে দিয়েছেন, আর বাতাসের দিক পরিবর্তন, আর আকাশ ও জমিনের মাঝে ভাসমান মেঘরাশিঃ এসবই নিদর্শন, চিন্তাশীলদের জন্য।’ - সূরাহ বাক্বারাহ(অধ্যায়-২),আয়াত-১৬৪
'তিনি আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেন, তারপর উপত্যকা সমূহে নিজ নিজ পরিমাণ অনুসারে স্রোতধারা প্রবাহিত হয়, তারপর প্রবল জলরাশির বন্যা ফেনাকে ভাসিয়ে তোলে, যেমন অলঙ্কার ও তৈজসপত্র বানানোর সময় আগুনে উত্তপ্ত গলানো ধাতুর উপর ফেনা উঠে; এভাবে আল্লাহ সত্য ও অসত্যের উপমা দেন; ফেনা আবর্জনার মতো ভেসে চলে যায়, আর মানুষের জন্য যা কল্যাণকর তা জমিনে থেকে যায়; আল্লাহ এভাবেই দৃষ্টান্তসমূহ বর্ণনা করেন।'-সূরাহ রা'দ(অধ্যায়-১৩),আয়াত-১৭
আপনি কি দেখেন না যে,আল্লাহ মেঘমালা সঞ্চালিত চালনা করেন,পরে তা একত্র করেন,পরে তা স্তরীভূত করেন,আর আপনি কি দেখেন না যে তা থেকে বৃষ্টি নির্গত হয়; আকাশমন্ডলীর শিলাস্তুপ হতে তিনি শিলা বর্ষণ করেন। আর তা দিয়ে যাকে ইচ্ছা আঘাত করেন এবং যার নিকট থেকে ইচ্ছা দূরে সরিয়ে নেন। তার বিদ্যূত ঝলক দৃষ্টি হরণ করতে চায়।’-সুরাহ নূর(অধ্যায়-২৪),আয়াত-৪৩
তিনিই আল্লাহ যিনি তারপর বাতাসকে প্রেরণ করেন, আর যা মেঘকে উত্তোলন করে(বহন করে),আর তিনি তাঁর ইচ্ছা মতো আকাশমন্ডলে মেঘমালা ছড়িয়ে দেন,আর খন্ড খন্ড করে দেন,তারপর তুমি তার মেঘের মাঝেই বৃষ্টি দেখতে পাও;আর যখন তিনি তাঁর বান্দাদের প্রতি তাঁর ইচ্ছেমতো মেঘমালা পৌঁছে দেন,তখন তারা আনন্দিত হয়।’-সুরাহ রূম(অধ্যায়-৩০), আয়াত-৪৮
'তিনিই আপন করূণার বৃষ্টি বর্ষণের আগে সুসংবাদ হিসেবে বাতাস পাঠান, আর আমি আকাশ থেকে পবিত্র বৃষ্টি ঝরাই।' 'যা দিয়ে আমি মৃত ধরণীকে সজীব করি আর তা পান করতে দেই আমার সৃষ্টির মধ্যে বহু পশু-প্রাণী ও মানুষকে।' 'আর উপদেশ গ্রহণের জন্য তাদের মাঝে তা ছড়িয়ে দেই, যেনো তারা ভেবে দেখে, কিন্তু অধিকাংশ মানুষই অকৃতজ্ঞ।'-সুরাহ ফুরক্বা-ন,(অধ্যায়-২৫),আয়াত-৪৮-৫০
'তোমরা কি ভেবে দেখেছো, তোমাদের বীর্যপাত সম্পর্কে? তোমরা তা সৃষ্টি করো, না আমি সৃষ্টিকর্তা?
আমি তোমাদের মাঝে মৃত্যু নির্ধারণ করে দিয়েছি, আর আমি অসমর্থ নই, আমি তোমাদের আকৃতির পরিবর্তন করে দিতে পারি, আর তোমাদের সৃষ্টি করতে পারি এমন রূপে যা তোমরা জানো না।
আর নিশ্চয় তোমরা অবগত আছো প্রথম সৃষ্টি সম্পর্কে।তাহলে কেনো তোমরা অনুধাবন করো না?
তোমরা যে বীজ বপন করো, সে সম্পর্কে ভেবে দেখেছো কি? তোমরা তা উৎপন্ন করো, না আমি উৎপন্নকারী ?
আমি ইচ্ছা করলে তা খড়কুটো করে দিতে পারি, তারপর তোমরা হয়ে যাবে হতবিহবল। বলবে হায়! আমরাতো ঋণের চাপে পড়ে গেলাম! না! বরং আমরা অধিকারবঞ্চিত হলাম!
তোমরা যে পানি পান করো, সে সম্পর্কে ভেবে দেখেছো কি? তোমরা তা মেঘ থেকে বর্ষন করো, না আমি বর্ষন করি? আমি ইচ্ছা করলে তাকে তিক্ত করে দিতে পারি, তা হলে কেনো তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো না?
তোমরা যে আগুন জ্বালাও, সে সম্পর্কে ভেবে দেখেছো কি? তোমরা কি সেখানে গাছ সৃষ্টি করো, না আমি সৃষ্টিকারী? আমি সেই গাছকে করেছি স্মরণিকা এবং উষর জনহীন প্রান্তরের মানুষের জন্য করেছি স্বস্তির সামগ্রী।
অতএব, আপনি আপনার প্রতিপালকের নামে পবিত্রতা ঘোষণা করুন, যিনি মহান!-সূরাহ -৫৬, আল-ওয়াক্বিয়াহ(অপরিহার্য), আয়াত ৫৮ থেকে ৭৪ পর্যন্ত।
'অবিশ্বাসীরা কি ভেবে দেখে না আকাশ ও পৃথিবী একসাথে মিশে ছিলো, আর আমিই তা পৃথক করলাম। পানি হতে সব প্রাণী সৃষ্টি করলাম, তবুও কি তারা বিশ্বাস করবে না?'-সুরাহ আনবিয়া, আয়াত-৩০
'বলুন, তোমরা পৃথিবীতে ভ্রমণ করো ও দেখো, কীভাবে তিনি সৃষ্টির সূচনা করেছেন, অতঃপর সমাপ্তির সৃষ্টির উদ্ভব ঘটান। নিশ্চয় আল্লাহ সবকিছুর উপর শক্তিমান।'-সূরাহ আনকাবুত(অধ্যায়-২৯),আয়াত-২০
তারা কি তাদের মনে অনুধ্যান করে দেখে না? আল্লাহ কি জগতসমূহ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেননি,আর এ দুয়ের মাঝে যা কিছু আছে তা কেবল সত্য দিয়ে(যথাযথরূপে) ও নির্দিষ্ট সময়ের জন্য? তবুও অনেক মানুষ আছে যারা তাদের পালনকর্তার সাথে সাক্ষাতকে অস্বীকার করে।’-সূরাহ রূম(অধ্যায়-৩০),আয়াত-৮
'আল্লাহ তোমাদের সৃষ্টি করেছেন(পৃথিবীর)মাটি/পৃথিবী থেকে, তারপর এক ফোঁটা বীর্য থেকে, তারপর তোমাদের করেছেন যুগলবন্দী। আর তাঁর অজ্ঞাতসারে কোনো নারী গর্ভধারণ করে না করে না সন্তান প্রসব। আর কোন বয়স্ক ব্যক্তি অতিরিক্ত সময়ের জন্য জীবন লাভ করে না আর না তার জীবনের সময়ও হ্রাস পায়; তা নির্ধারিত আছে এক কিতাবে। নিশ্চয় এতো সহজ আল্লাহর পক্ষে।'-সুরাহ ফাতির,(অধ্যায়-৩৫) আয়াত-১১
আর তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে এই যেঃ তিনি তোমাদের মাটি(তুরবিন) থেকে সৃষ্টি করলেন। তারপর, তোমরা মানুষ,বিস্তৃত ছড়িয়ে পড়ছো! -সূরাহ রূম(অধ্যায়-৩০),আয়াত-২০
আর তাঁর নিদর্শন হলো এই যেঃ তিনি তোমাদের জন্য,তোমাদের মধ্য থেকে সৃষ্টি করলেন জীবনসঙ্গী(আযওয়াজান),যেনো তোমরা তাদের মাঝে শান্তি খুঁজে পাও,আর তিনি তোমাদের মাঝে মায়া ও দয়া ব্যাপ্ত করে দিলেন। নিশ্চয় চিন্তাশীলদের(অনুধ্যানকারীদের) জন্য এতে নিদর্শন রয়েছে।’ -সূরাহ রূম(অধ্যায়-৩০),আয়াত-২১
পবিত্র মহান সেই সত্ত্বা, যিনি পৃথিবীর যা কিছু সব জোড়া জোড়া সৃষ্টি করেছেন, আর তা থেকে যা কিছু, আর যা তারা জানে না।’-সুরাহ ইয়া-সী-ন(অধ্যায়-৩৬) আয়াত ৩৬
'আর তিনিই তোমাদেরকে পৃথিবীতে বহুসংখ্যায় ছড়িয়ে দিয়েছেন, এবং তার কাছেই তোমরা সমবেত হবে।'-সূরাহ আল-মুমিনুন (বিশ্বাসীগণ)অধ্যায়-২৩:৭৯
আর কতো জনপদের আমি যবনিকা ঘটিয়েছি যার অধিবাসীরা ছিলো অন্যায়কারী,আর তাদের পরে প্রতিষ্ঠা করেছি অন্য জাতি!’-সূরাহ আন্বিয়া(অধ্যায়-২১),আয়াত-১০,১১
'আর আমি এমন সব জনপদ/সভ্যতা তাদের গুরতর অন্যায়ের জন্য ধ্বংস করেছি, আর তাদের ধ্বংসের নির্দিষ্ট কাল নির্ধারণ করেছি। '-সুরাহ কাফ, আয়াত-৫৯
আর নিশ্চয় আমিতো ধ্বংস করেছিলাম তোমাদের আশেপাশের শহরগুলি/বস্তিসমূহ। আর আমি বিভিন্ন ভাবে তাদের নিদর্শন দেখিয়েছি। যেনো তারা ফিরে আসে।‘-সুরাহ আহক্বা-ফ, অধ্যায়-৪৬,আয়াত-২৬-২৭
'যখন সাগরে বিপদে পড়ো, তখন তিনি ছাড়া অন্য যাদেরকে আহবান করো তারা সবই অন্তর্হিত হয়। যখন তিনি স্থলের দিকে মুক্তি দেন, তখন তোমরা পুনরায় বিমুখ হও। মানুষ বড়ই অকৃতজ্ঞ।'-সুরাহ বণী ইসরাঈল/আল-ইসরা (রাতের ভ্রমণ)-আয়াত-৬৭-৬৯
আর নিশ্চয় আমি আপনার পূর্বের সম্প্রদায়(জাতিগোষ্ঠী)গুলির কাছেও প্রেরণ করেছিলাম। আর তাদেরকে ধরেছিলাম দু:খ-কষ্ট, বিপদ আপদ দ্বারা, যেনো তারা নিজেদের মধ্যে দীনতায়-বিনম্রতায় বেড়ে ওঠে।’ - সূরাহ আন'আম(অধ্যায়-৬),আয়াত-৪২
তোমদের পূর্বে অনেক ঘটনা ঘটেছে, তাই পৃথিবীতে ঘুরে দেখো, অস্বীকারকারীদের পরিণতি কীরূপ হয়েছে।’-সুরাহ ইমরান, আয়াত ১৩৭
'আদ জাতির ব্যাপারতো এমন যে, তারা পৃথিবীর বুকে অযথা দম্ভ করতো আর বলতো 'আমাদের চেয়ে শক্তিধর আর কে আছে?' তারা কি দেখে না, তাদের সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তাদের চেয়ে কতো শক্তিময়? অথচ তারা আমার নিদর্শনসমূহ অস্বীকার করে।'
'সে জন্য আমি তাদের উপর পাঠালাম করলাম প্রচন্ড ঝঞ্বাবায়ু, পার্থিব জীবনে তাদেরকে অপমানকর শাস্তির আস্বাদন করানোর জন্য। আর পরকালের শাস্তিতো আরো লাঞ্ছনাকর, সেখানে তারা কোনো সাহায্যকারী পাবে না।'-সুরা হা-মী--ম সাজ্বদাহ, আয়াত-১৫,১৬
'এরা কি সেসব লোকদের অতীতের অনুরূপ ঘটনার প্রতীক্ষায় আছে যারা তাদের পূর্বে পৃথিবী ছেড়ে গেছে ? আপনি বলুন, তবে তোমরা অপেক্ষায় থাকো! আমিও অপেক্ষায় আছি। '-সুরাহ ইউনুস , আয়াত-১০২
বলুনঃ কে তোমাদেরকে আকাশ ও পৃথিবী থেকে তার রিযিক(বেঁচে থাকার উপকরণ) প্রদান করেন? শ্রবণ শক্তি ও দৃষ্টি শক্তি কার অধীনে? কে বের করে আনেন জীবিতকে মৃত হতে এবং মৃতকে জীবিত হতে; কেই বা সমস্ত কিছু নিয়ন্ত্রণ করেন? তখন তারা অবশ্যই বলবেঃ আল্লাহ;বলুনঃ তবুও কি তোমরা সাবধান হবে না?’
বলুনঃ তোমরা কি চিন্তা করে দেখেছো যদি আল্লাহ তোমাদের শ্রবণশক্তি ও দৃষ্টিশক্তি সরিয়ে নেন আর তোমাদের অন্তরে মোহর এঁটে দেন (বন্ধ করে দেন), তবে তোমাদের এই ইলাহ(আল্লাহ) ব্যতীত এমন কোন ইলাহ (আল্লাহ ছাড়া অন্য উপাস্য) তোমাদেরকে এগুলি ফিরিয়ে এনে দেবে? দেখো, আমি কীভাবে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে নিদর্শনাবলী বর্ণনা করি; এরপরও তারা বিমুখ হচ্ছে।’-সূরাহ আন'আম(অধ্যায়-৬),আয়াত-৪৬
'অথবা গহীন সমুদ্রের অন্ধকারের মতো, যেখানে তাকে ঢেকে দেয় তরঙ্গের পর উপর তরঙ্গ, যার উপরে কালো মেঘ, স্তরে স্তরে জমাট অন্ধকার; সে তার হাত বের করলেও প্রায় দেখতে পায় না, আল্লাহ যাকে আলো দেন না, তার জন্য কোনো আলো নেই।'- সূরাহ নূর(অধ্যায়-২৪),আয়াত-৪০
স্থলে ও পানিতে মানুষের কৃতকর্মের দরুণ বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে। আর আল্লাহ তাদেরকে তাদের কৃতকর্মের কিছু অংশের ফলাফল আস্বাদন করাতে চান, যেনো তারা ফিরে আসে।’-সূরাহ রূম, আয়াত-৪১
'বলুন, তোমরা ভেবে দেখেছো কি, যদি তোমাদের পানি ভূগর্ভের গভীরে চলে যায়, তবে কে তোমাদেরকে সরবরাহ করবে পানির স্রোতধারা?'-সুরাহ আল-মূলক(অধ্যায়-৬৭),আয়াত-৩০
আপনি কি দেখেন না, জগতরাশি (নভোমন্ডল) ও পৃথিবীতে যারা আছে তারা সবাই, আর উড়ন্ত পাখিরা প্রত্যেকে আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা ঘোষণা করে? প্রত্যেকেরই এবাদত পদ্ধতি ও তসবিবিদ্যা (আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনার উপায়) জানা আছে। আর আল্লাহ তাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে সর্বজ্ঞাত।’-সুরাহ নূর(অধ্যায়-২৪), আয়াত-৪১
আর এমন কোনো প্রাণী নেই এ পৃথিবীর অথবা কোনো পাখি যা ডানায় ভর করে উড়ে কিন্তু তারা সবাই তোমাদের মতো এক একটা জাতি(উম্মত)।গ্রন্থে কোনো কিছু সম্পর্কেই উপেক্ষা করা হয় নি। পরে তারা সবাই তাদের প্রতিপালকের কাছে সমবেত হবে।’-সুরাহ আন'আম(অধ্যায়-৬), আয়াত-৩৮
আমার প্রতিপালক প্রত্যেক বস্তুকে জ্ঞান দ্বারা পরিবেষ্টন করে রেখেছেন।’-সূরাহ আন'আম(অধ্যায়-৬),আয়াত-৮০(১৯-২৩)
অতএব আল্লাহই তোমাদের প্রকৃত পালনকর্তা।আর সত্য প্রকাশের পর আর কী আছে বিভ্রান্তি ছাড়া? সুতরাং কেমন করে(বিভ্রান্তির দিকে) ঘুরে যাচ্ছো?’
এভাবেই তোমার প্রতিপালকের কথা প্রমাণিত হয় তাদের বিরুদ্ধে যারা অবাধ্যঃ তারা বিশ্বাস আনবে না।’- সূরাহ ইউনুস(অধ্যায়-১০),আয়াত-৩১-৩৩
মানবজাতির কাছে এটি কি এক বিস্ময় যে আমি তাদের মাঝ থেকে একজন মানুষষের কাছে ওহি প্রেরণ করলাম (প্রত্যাদেশ অবতীর্ণ করলাম),যেঃ মানব সম্প্রদায়কে সতর্ক করুন,আর তাদেরকে সুসংবাদ দিন যারা বিশ্বাস করে যে তাদের জন্য সত্য মর্যাদার অবস্থান(কাদামা সিদকিন) রয়েছে প্রতিপালকের কাছে । কাফেররা(অবিশ্বাসী-অকৃতজ্ঞরা)বলেঃনিশ্চয় এ এক প্রকাশ্য জাদুকর।’ - সূরাহ ইউনুস(অধ্যায়-১০),আয়াত-২
নিশ্চয় আমি তোমাদের কাছে একটি গ্রন্থ(ধর্মগ্রন্থ) প্রেরণ করেছি,যেখানে রয়েছে তোমাদের জন্য উপদেশ(স্মরণের জন্য)। তোমরা কি তা বোঝো না?’
'তুমি কি দেখোনি যে, আল্লাহর প্রতি সশ্রদ্ধ প্রণত হয়( সেজদা করে) যা কিছু আছে নভোমন্ডলে, যা কিছু আছে ভুমন্ডলে, সূর্য, চন্দ্র, তারকারাজি পর্বতরাজি বৃক্ষলতা, জীবজন্তু আর অনেক মানুষ; যখন অনেকের জন্য ধ্বংস
অবধারিত/পাওনা হয়েছে । আল্লাহ যাকে অবনমন করেন করেন, তাকে কেউ সম্মানিত করতে পারে না। নিশ্চয়! আল্লাহ করেন তাঁর ইচ্ছায়।'-সূরাহ হজ্জ্ব, অধ্যায়-২২, আয়াত-১৮
'সাত আকাশ(জগত) আর পৃথিবী আর এদের মাঝে যা কিছু আছে সমস্তই তাঁর মহিমা ঘোষণা করে; আর একটি বস্তুও নেই যা তাঁর সপ্রশংস মহিমা ঘোষণা করে না; কিন্তু তাদের এই মহিমা ঘোষণা তোমরা অনুধাবন করতে পারো না। নিশ্চয় তিনি অতি সহনশীল, ক্ষমা পরায়ন।' -সূরাহ আল-ইসরা, ১৭ঃ৪৪
তারা কি কুরআনের কথা/বাণী নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করেনি ? নাকি তাদের কাছে এমন কিছু এসেছে যা তাদের পূর্ব পুরুষের কাছে আসে নি?’ 'না তারা তাদের রসূলকে চেনে না, ফলে তারা তাঁকে অস্বীকার করে?' 'না তারা বলে যে, তিনি মানসিক বিকারগ্রস্ত? বরং তিনি তাদের কাছে সত্য নিয়ে এসেছেন, আর তাদের অধিকাংশ সত্যকে অপছন্দ করে।' 'সত্য যদি তাদের কাছে কামনা-বাসনার অনুসারী হতো, তবে নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল আর এদের মাঝে সবকিছুই বিশৃঙ্খল হয়ে পড়তো। না! আমি তাদেরকে কাছে সতর্ককতা পাঠিয়েছি, কিন্তু তারা এখন তাদের সতর্কতা(উপদেশ) থেকে অন্য দিকে ঘুরে গেছে।'-সূরাহ আল-মুমিনুন (বিশ্বাসীগণ)অধ্যায়-২৩:৬৮-৭১
এ কুরআনে বহু বর্ণনা প্রদান করেছি, যেনো তারা সতর্ক হয়, অথচ এতে তাদের কেবল ঘৃণাই বাড়লো।
তিনি তাদের বক্তব্য হতে পবিত্র, বহু উর্ধে।
যখন আপনি কুরআন তেলাওয়াত করেন তখন আমি আপনার ও পরকালে অবিশ্বাসীদের মাঝে একটা গোপন পর্দা রেখে দেই।’-সুরাহ আল-ইসরা (বনী ইসরাইল), আয়াত-৪১,৪৩, ৪৫
'আপনার প্রতিপালকের ইচ্ছে হলে পৃথিবীর সবাই ঈমান আনতো, তবে কি আপনি মানুষকে বিশ্বাসী হওয়ার জন্য জোর করবেন?' 'আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়া ঈমান আনা কারো পক্ষেই সম্ভব নয়। তিনি তাদের ওপর অপবিত্রতা আরোপ করেন যারা নিজের বোধসত্তাকে ব্যাবহার করে না।' 'আপনি বলুন, ‘দেখো, আকাশে ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে।কিনতু যাদের ঈমান নেই নিদর্শন ও সতর্কতা তাদের কোনো কাজে আসবে না।'-সুরাহ ইউনুস (অধ্যায়-১০), আয়াত-৯৯ থেকে ১০১
পরম পবিত্র সেই সত্তা, যাঁর হাতে নিহিত রয়েছে সর্বময় কর্তৃত্ব। তিনি সর্ব শক্তিমান। যিনি মৃত্যু ও জীবন সৃষ্টি করলেন, তোমাদের মধ্যে কর্মে কে শ্রেষ্ঠ তা পরীক্ষা করার জন্য, তিনি মহা পরাক্রমশালী, পরম ক্ষমাশীল।’-সুরাহ মুলক(অধ্যায়-৬৭), আয়াত ১,
'আল্লাহ হচ্ছেন জগত সমূহ আর পৃথিবীর আলো (জ্যোতি); সেই আলো যেনো এক কুলঙ্গি, যাতে আছে একটি প্রদীপ, প্রদীপটি একটি কাঁচের পাত্রে স্থাপিত, কাঁচপাত্রটি উজ্জ্বল নক্ষত্রসম। এটি প্রজ্বলিত পবিত্র বৃক্ষের তেলে, যা না পূর্বমুখী এবং না পশ্চিমমুখী। আগুন স্পর্শ না করলেও তার তেল যেনো নিজ থেকেই আলো ছড়ায় । আলোর উপর আলো। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তাকে তাঁর আলোর পথ দেখান । আর আল্লাহ মানুষের জন্য দৃষ্টান্তসমূহ বর্ণনা করে, আর আল্লাহ সব কিছু জানেন।'-সূরাহ নূর(অধ্যায়-২৪),আয়াত-৩৫
'আমি তাদেরকে পৃথিবীর দিগন্তে আর তাদের অন্তরের মাঝে আমার নিদর্শনাবলী দেখাবো যতোক্ষণ না তাদের কাছে এটি ফুটে উঠবে যে, এ কোরআনসত্য। আপনার পালনকর্তা সব বিষয়ে সাক্ষ্যদাতা, এটা কি যথেষ্ট নয়?'-সুরাহ ফাসিলাত(হা মীম সেজদাহ)(অধ্যায়-৪১),আয়াত-৫৩
(অসমাপ্ত)

Comments

Popular posts from this blog

'শুন হে মানুষ ভাই, সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই।' : আমি মানুষ বনাম আমি মুসলমান-আইনুল বারী

অপব্যাখ্যাত আয়াত ৪ঃ৩৪- স্ত্রীকে প্রহার করা কি ইসলামে অনুমোদিত?-আইনুল বারী

সত্য অনুসন্ধানী ধার্মিকের চোখে নাস্তিক্যবাদী সংশয় ঘৃণার বস্তু নয়, কেননা জ্ঞানের সংশয়ে পাপ নেই, জ্ঞান চর্চায় ঘৃণা বিদ্বেষের প্রয়োজন নেই -আইনুল বারী