আমাদের জীবনে অস্থিরতা ও অশান্তির প্রধান কারণ কী? -আইনুল

৪৪.আমাদের জীবনে অস্থিরতা অশান্তির প্রধান কারণ কী?
-আইনুল বারী
 --  ---- ---       ----
কারণ আমাদের সামাজিক জীবনের অস্থিরতা অশান্তিই আমাদের উপর আপতিত হয়, এবং আমরা তাকে সঠিকভাবে মোকাবিলা করতে পারি নাযখন কোনো আপন জন কারো বিশ্বাস ভংগ করে তখন কষ্টে নিঃশেষ হই, কেউ কেউ আত্মহননের পথ বেছে নেই; কারো অন্যায় আচরণে ক্রুদ্ধ হয়ে প্রতিশোধ নেই বা নিতে চাই; ব্যবসায় বড় লোকসান হলে মানসিক ভাবে ভেংগে পড়ি লোকসান পুষিয়ে নিতে দূর্নীতি আশ্রয় নেই; দৈহিক সৌন্দর্যের কমতিতে, দারিদ্র্যের গ্লানিতে, স্বাস্থহানির কারণে বা দূরারোগ্যে পড়ে নিজেকে অভিসম্পাত করতে থাকি অন্যের প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে ক্ষতির চিন্তা করি কেনো?

কেননা আমরা এই সব কিছুই নিজের প্রতি অন্যের জুলুম বা অবিচার বলে মনে করি। আর মনে করি অত্যাচারী ব্যক্তিটির আমার উপর জুলুম করার ক্ষমতা আছে। কাজেই তার বিরুদ্ধে কু-প্রবৃত্তির তাড়নায় উপযুক্ত প্রতিক্রিয়াই করতে চাই একই ধরণের অন্যায় পালটা আচরণের মাধ্যমে। আমরা কেউ বিশ্বাস করি না আর কেউ  ভুলে যাই ক্ষমা, ধৈর্য ও সহ্য শক্তি নিয়ে আল্লাহর উপর ভরসা করার কথা, আল্লাহর কাছে আত্ম-সমার্পনের কথা, ভুলে যাই সমস্ত ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের অধিকারী একমাত্র আল্লাহ! বিশ্বাস করি না অথবা ভুলে যাই, পার্থিব জীবনে মানুষ একে অন্যের জন্য পরীক্ষা স্বরূপ। ভুলে যাই আল্লহ'র অনুমোদন ছাড়া কেউ কাউকে কষ্ট দিতে পারে না,কারো কষ্ট কেউ দূরও করতে পারে না। এও ভুলে যাই মানুষের সত্যিকার কোনো ক্ষমতা নেই, প্রকৃত ক্ষমতা মানুষের সৃষ্টিকর্তা ও প্রতিপালক মহান আল্লাহর।

যদি পবিত্র কথাগুলি ভুলে না যেতাম সত্যিকার অর্থেই সততার সাথে বাস্তব জীবনে তা মেনে চলতাম তাহলে আল্লাহ চাইলে আমাদের জীবনে অস্থিরতা অশান্তি অনেকাংশেই দূর হতো। আল্লাহর প্রতিশ্রুতি এমনই।তখন ঘটে যাওয়া নেতিবাচক ঘটনাগুলি নতুন অর্থ নিয়ে উপস্থিত হতো; তীব্র দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে অশান্তি সৃষ্টি করতো না পালটা খারাপের জন্য প্ররোচিত করতো না

একজন বিশ্বাসীর কাছে কোনো নেতিবাচক ঘটনা ঘটনার বিশ্লেষণ, তা থেকে শিক্ষা গ্রহণ, ন্যায় সংগত আচরণ এবং সহ্য-ধৈর্যের মাধ্যমের তার প্রতি প্রতিক্রিয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকা উচিত। কেউ যদি অন্যায় আচরণ করে অন্যায়কারী নিজেকেই ক্ষতিগ্রস্ত করছে।তার কি ক্ষমতা অন্যের ক্ষতি করবে? আল্লাহ অনুমোদন না দিলে সে কারো খারাপও করতে পারতো না।কিন্তু আল্লাহ তাকে খারাপের দিকে চলতে দিচ্ছেন, যা সে নিজ ইচ্ছায় বেছে নিচ্ছে।সে পথভ্রষ্ট হচ্ছে। তাই একটি অন্যায়ের প্রতিক্রিয়ায় পালটা অন্যায় করা বোকামি। আল্লাহর উপর ভরসা করা উচিত। তিনিই সম্মান দিবেন কষ্ট লাঘব করবেন।তাঁর উপর নির্ভরশীলরা কখনোই প্রকৃত অর্থে ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। আমাদের এমন বুঝ থাকা উচিত। আমরাতো জানি না নেতিবাচক ঘটনাগুলি আমাদের জীবনে কেনো ঘটছে, সেসব কীসের পরীক্ষা! হতে পারে কু-প্রবৃত্তির উপর কতোটা নিয়ন্ত্রণ আনতে পেরেছি তারই পরীক্ষা, হতে পারে এভাবেই ক্রমে আত্মশুদ্ধি হচ্ছি, এভাবেই আল্লাহ বিশ্বাসীদের পবিত্রতা থেকে অপবিত্রতাকে আলাদা করেন। তাই হতাশার কিছু নেই।বিশ্বাসীদের নিরাশ হওয়া আল্লাহর প্রতি অকৃতজ্ঞতা প্রদর্শনের মতো বড় পাপ। আমাদের জীবনে প্রতিটি ঘটনার এক একটি সত্য উন্মোচনকারী অর্থ রয়েছে, ইসলামের জ্ঞানচক্ষু দিয়ে তাকে অনুধাবন করতে পারলেই জীবন সার্থক হবে। নতুবা পারষ্পরিক ঘৃণা-বিদ্বেষ হানাহানিতেই জীবন ব্যর্থ হবে। একদিন আলোর দিকে ফিরবোই আমরা,অন্তকরণে এই আশা, এই প্রার্থণা, সব সময়



Comments

Popular posts from this blog

'শুন হে মানুষ ভাই, সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই।' : আমি মানুষ বনাম আমি মুসলমান-আইনুল বারী

অপব্যাখ্যাত আয়াত ৪ঃ৩৪- স্ত্রীকে প্রহার করা কি ইসলামে অনুমোদিত?-আইনুল বারী

সত্য অনুসন্ধানী ধার্মিকের চোখে নাস্তিক্যবাদী সংশয় ঘৃণার বস্তু নয়, কেননা জ্ঞানের সংশয়ে পাপ নেই, জ্ঞান চর্চায় ঘৃণা বিদ্বেষের প্রয়োজন নেই -আইনুল বারী