Posts

Showing posts from December, 2017

জ্ঞানের গভীরে জ্ঞান -আইনুল বারী

১০৪.জ্ঞানের গভীরে জ্ঞান -আইনুল বারী -------------- জ্ঞানের নানা স্তর আছে। জ্ঞানের যে স্তরে আমরা আছি , তার পরের স্তরে কীভাবে যেতে হয় আমরা এখনো জানি না , কিন্তু কেউ কেউ যান। যারা যান তারা বলে্ন , এ হলো সাক্ষাৎ জ্ঞান , সত্যজ্ঞান , বোধিলাভের জ্ঞান। কয়েকটি বড় অভিজ্ঞতার পর এমন কিছু জ্ঞানলাভ হয় যা সাধারণ পড়াশোনা ও অভিজ্ঞতা থেকে অর্জন করা সম্ভব হয় না। বড় অভিজ্ঞতাগুলিকে আমরা বলি মিরাকেল অভিজ্ঞতা , আবার কেউ বলে্ন NDE (Near death experience) বা কেউ বলেন , এতো সত্যিকার ঐশ্বরিক সাক্ষ্যাৎ! কিন্তু যাদের এমন অভিজ্ঞতা নেই আর যাদের সংশয়ী মন , তারা ভাবেন , এ আসলে অলৌকিক কিছু নয় , এ হলো হেলুসিনেশন বা মানসিক অস্বাভাবিকতা। এসব অসামান্য অভিজ্ঞতা মানুষের চিন্তা-চেতনাকে বহু দূরে বা বহু গভীরে নিয়ে যায়। অভিজ্ঞতাগুলি প্রায় পূনর্জন্ম লাভের সমান হয়। তারা কী দেখেন , কী জানেন , কী অনুভব করেন , তা তাদের কাছে একান্তে যে পূর্ণ মাত্রায় পরিস্ফুটিত হয় , তা অন্যের কাছে  ঠিক ঠিক  বর্ণনা করতে পারেন না। এই অক্ষমতাকে নেতিবাচক ভেবে নেয়া উচিত নয়। সব কিছুর মতো জ্ঞানেরও বিধি-নিষেধ আছে। কিছু জ্ঞান আছে য...

পৃথিবীর শেষ যুদ্ধঃ তথ্য ও ধারণার যুদ্ধ -আইনুল বারী

১০৩. পৃথিবীর শেষ যুদ্ধ : তথ্য ও ধারণার যুদ্ধ -আইনুল বারী --------------------------------------------------------------------------- (১) পৃথিবীর তথা সভ্যতার শেষ যুদ্ধ যদি অনিবার্য হয়, তবে সে যুদ্ধের প্রকৃতি ও রণকৌশল কেমন হবে, তার অস্ত্রের ধরনই বা কতোটা পালটে যাবে? কারা বা জয়ী হবে, এ প্রশ্নগুলি আজ সচেতন সাধারণ মানুষেরও কৌতুহলের বিষয়। যুদ্ধের ইতিহাস ঘেঁটে দেখলে, মানুষের রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-সামাজিক ইতিহাসের পাতা উল্টালে, আর বর্তমানের ঘটনা-প্রবাহের দিকে মনোযোগী হলে অনুমান করা কঠিন নয় আগামীতে বিশ্ব ব্যবস্থা কোন দিকে পাল্টাবে, কতোটা পাল্টাবে। মানব সভ্যতার বিবর্তনের ঐতিহাসিক ক্যানভাসে বিভিন্ন যুগের সমাজ পরিবর্তনের গতি-প্রকৃতির পর্যবেক্ষণ আমাদেরকে বুঝিয়ে দিতে পারে পৃথিবীর শেষ যুদ্ধে আগ্নেয়াস্ত্র জয়-পরাজয়ের সিদ্ধান্ত জানাতে পারবে না, কেননা যুদ্ধ শেষ পর্যন্ত রূপান্তরিত হতে হবে বুদ্ধিবৃত্তিক যুদ্ধে, তথ্য ও ধারণার শক্তিতে। (২) তথ্য ও ধারণাকে আলাদাভাবে না লিখলেও চলতো, কেননা তথ্য ধারণার অন্তুর্ভুক্ত, তথ্য দিয়েই ধারণা শক্তিশালী হয়। সভ্যতার সূচনালগ্ন থেকে বুদ্ধিবৃত্তিক অগ্রগতি...

সত্য অনুসন্ধানী ধার্মিকের চোখে নাস্তিক্যবাদী সংশয় ঘৃণার বস্তু নয়, কেননা জ্ঞানের সংশয়ে পাপ নেই, জ্ঞান চর্চায় ঘৃণা বিদ্বেষের প্রয়োজন নেই -আইনুল বারী

১০২.সত্য অনুসন্ধানী ধার্মিকের চোখে নাস্তিক্যবাদী সংশয়   ঘৃণার বস্তু নয় ,  কেননা জ্ঞানের সংশয়ে পাপ নেই ,  জ্ঞান চর্চায় ঘৃণা বিদ্বেষের প্রয়োজন নেই  -আইনুল বারী ---------- সত্য অনুসন্ধানী ধার্মিকের চোখে নাস্তিক্যবাদী সংশয় ঘৃণার বস্তু নয় , কেননা জ্ঞানের সংশয়ে পাপ নেই , জ্ঞান চর্চায় ঘৃণা বিদ্বেষের প্রয়োজন নেই । ( ১) অথচ আমরা এমন ধার্মিকতার শিক্ষায় অভ্যস্ত যেখানে ধার্মিকের কাছে নাস্তিকতার চিন্তা-ভাবনা পাপের মতো , অস্পৃশ্য। সমাজে প্রভাব শালী , প্রতিপত্তিশালী , কঠোর ভাবাপন্ন ধার্মিকেরা মনে করে নাস্তিকতা অপ্রয়োজনীয় ও অতিশয় ক্ষতিকর বিষয়। যদিও সমাজে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক উদার মনের যুক্তিবাদী ধার্মিক রয়েছে , যারা নাস্তিকতার যুক্তি খন্ডনে তৎপর থাকেন , কিন্তু তা্রাও অনেকে নাস্তিকতাকে ক্ষতিকর বিষাক্ত সংক্রামণ বিবেচিত করে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করতে চায়। নাস্তিকতার প্রতি দৃষ্টিভঙ্গির এই সামগ্রিক নেতিবাচকতা কিন্তু ঠিক কাজ নয়। যদি নাস্তিকতার বুদ্ধিবৃত্তিক তত্ত্বানুসন্ধানকেও বিশ্বাসের জায়গা থেকে কাজে লাগানো যায় , তবে তা ধার্মিকের আত্মোপলব্ধিকে চিন্তাগত দিক থেকে আরও গভীর করতে পার...

আত্ম-সংশোধনের 'হুল ফোঁটানো' কৌশলঃ -আইনুল বারী

১০১.আত্ম-সংশোধনের 'হুল ফোঁটানো' কৌশলঃ -আইনুল বারী -------------------------------------------------- মনের ভেতরের অপরাধীকে বের করে নিয়ে আসার একটি পদ্ধতি আছে। একে বলে 'হুল ফোঁটানো' পদ্ধতি, ইংরেজিতে বলে Sting operation। জঙ্গিবাদী সন্ত্রাস দমনে পাশ্চাত্যের গোয়েন্দারা এই পদ্ধতি অনুসরণ করছে। টার্গেটের অপরাধমূলক তৎপরতার প্রাথমিক তথ্যা-প্রমাণ মিললেই তার পেছনে গোয়েন্দারে মাঠে নামে। গোয়েন্দারা নিজেদেরকে অপরাধী চক্রের সদস্য হিসেবে টার্গেটের কাছে উপস্থাপন করে। তারপর তার সামনে টোপ দিয়ে তাকে ধাপে ধাপে  অপরাধে প্ররোচিত করে, এভাবে অপরাধ সংঘটনের পর্যায়ে নিয়ে গিয়ে হাতে নাতে আটক করে। রেজওয়ানুল আহসান নাফিস নামের ২১ বছরের একজন বাংলাদেশীকে ২০১২ সালে নিউ ইয়র্ক ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক বোমা মেরে উড়িয়ে দেয়ার পরকিল্পনার অভিযোগে এফবিআই এই পদ্ধতিতে আটক করে। সে আল কায়দার সমর্থক ছিলো বলে এফবিআই মনে করে। জয়েন্ট টেরোরিজম টাস্ক ফোর্স টিমের কাছে তার সম্পর্কে আগে থকেই কিছু তথ্য-প্রমাণ ছিলো, এরপর গোয়েন্দা টিম তাকে হুল ফোঁটানো প্রক্রিয়ায় চূড়ান্ত মূহূর্তে আটক করে। বিচারে তার ৩০ বছরের কারাদন্ড হয়। তবে...

বাংলায় ইসলামের আগমন ও সামজিক-সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক রূপান্তরের নীরব বিপ্লবঃ বিকল্প ইতিহাস পাঠ -২ -আইনুল বারী

Image
১০০.বাংলায় ইসলামের আগমন ও সামজিক-সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক রূপান্তরের নীরব বিপ্লবঃ বিকল্প ইতিহাস পাঠ -২ -আইনুল বারী ---------------------- বাংলা ভাষার আত্মপরিচয়ের সন্ধানেঃ আদিকালে এ অঞ্চলের বিভিন্ন জনপদের সর্বসাধারণের কথ্যভাষা ছিল নানা ধরণের প্রাকৃত ভাষা। অনু. খ্রিষ্টপূর্ব ৪৫০ থেকে ১০০০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত ভাষাসমূহের প্রচলন ছিলো। ভাষাবিদদের মতে সমস্ত প্রাকৃত ভাষারই শেষ স্তরটি হল অপভ্রংশ। মোটামুটি হিসেবে খৃষ্টীয় প্রথম সহস্রাব্দের শেষ প্রান্তে এসে মধ্য ভারতীয় আর্য প্রাকৃত ভাষাগুলির অপভ্রংশ (অর্থাৎ যা খুব বিকৃত হয়ে গেছে এমন) অবস্থা থেকে স্বতন্ত্র পরিচয়ে আধুনিক রূপে বেরিয়ে আসতে শুরু করে ভারতের নব্য ইন্দো-আর্য আঞ্চলিক ভাষাগুলি, বাংলা-অসামিয়া-ওড়িয়া ভাষা তার অন্যতম। সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের মতো গবেষকদের মত হলো, পূর্ব মাগধী অপভ্রংশ থেকেই বাংলা,আসামি ও উড়িয়া,মৈথিলি ইত্যাদি ভাষা উদ্ভূত হয়েছে। পূর্বী অপভ্রংশ থেকে গৌড়ীয় ধারার বাংলা-অসামিয়া-ওড়িয়া এই তিনটি ভাষার মধ্যে আত্মীয়তার সম্পর্ক বিদ্যমান। অনু. ৯০০- ১০০০ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৪০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে বাংলা ভাষার যে বিক...